আজকাল ওয়েবডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার কয়েক ঘন্টা পরেই ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে। যা পাকিস্তানের ৮০% কৃষি জমির জন্য জল নিশ্চিত করে। সেই চুক্তি স্থগিত করা নিয়ে হুমকি দিলেন সে দেশের প্রতিরক্ষমন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। তাঁর হুঁশিয়ারি, সিন্ধু চুক্তির অধীনে পাকিস্তানের অংশের জলের প্রবাহ অন্যদিকে সরানোর জন্য ভারত কোনও কাঠামো তৈরি করলে তা ধ্বংস করে দেওয়া হবে।
পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন আসিফ। সেখানেই তিনি পাকিস্তানের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, "পাকিস্তানের জলসীমার যেকোনো পরিবর্তনকে 'আগ্রাসন' হিসেবে দেখা হবে।"
সিন্ধু অববাহিকায় ভারত যদি বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়, তাহলে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে আসিফ বলেন, "তা হবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন... এমনকি যদি তারা (ভারত) এই ধরণের স্থাপত্যের প্রচেষ্টা করে, পাকিস্তান সেই কাঠামো ধ্বংস করবে।"
আসিফের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র শাহনাওয়াজ হুসেন বলেন, ''এই ধরনের 'ফাঁকা হুমকি' কেবল পাকিস্তানিদের মধ্যে ভয়েরই বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।"
তিনি বলেন, "খোয়াজা আসিফ দৃশ্যতই ভীত। যদিও তিনি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, তাঁর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তিনি কেবল একজন 'বিবৃতিমন্ত্রী', ক্রমাগত ফাঁকা হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। পাকিস্তানিদের মধ্যে ভয় স্পষ্ট। তাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে।"
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। স্থগিত করা হয়েছে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। এই জলের উপরে গোটা দেশের ৮০ শতাংশ কৃষিকাজ নির্ভরশীল।
ভারত সরকার ইতিমধ্যেই নিকট ভবিষ্যতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে তার সমস্ত আইনি ও প্রযুক্তিগত দিক খতিয়ে দেখছে। চুক্তি স্থগিত করার ফলে ভারত সিন্ধু নদের জল কীভাবে ব্যবহার করবে তারও বিকল্পের খোঁজ চলছে।
তবে, আপাতত ভারত জলপ্রবাহ বন্ধ করতে পারবে না কারণ পাকিস্তানকে বরাদ্দ করা তিনটি নদীর উপর পর্যাপ্ত পরিমাণে জলাধারের ব্যবস্থা নেই। বিদ্যমান বাঁধগুলির জল ধারণের ক্ষমতা পর্যাপ্ত নয়।
জলচুক্তি স্থগিত করার পর গত সপ্তাহে, পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি ভারতকে হুঁশিয়ারি দেন, "হয় আমাদের জল দিতে হবে, না হলে ভারতীয়দের রক্ত সিন্ধু নদীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে"।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, পাকিস্তানের জলের প্রবাহ বন্ধ বা অন্য দিকে সরানোর যে কোনও প্রচেষ্টাকে 'যুদ্ধের সামিল' হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
