আজকাল ওয়েবডেস্ক: যুদ্ধ থেমেছে। কিন্তু, গাজায় অশান্তি, রক্তপাত নিয়ে চিন্তায় রয়েছে ওয়াশিংটন। এসবের মধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর, ২০২৫) হামাসকে সতর্ক করে দিয়েছেন। হাড়হিম করা হুঙ্কার ছেড়েছেন তিনি। বলেছেন, 'গাজায় অভ্যন্তরীণ রক্তপাত অব্যাহত থাকলে সেখানে ঢুকে তাদের হত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।'

দুই বছরের যুদ্ধ চলার পর গত সপ্তাহে ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি ফেরৎ চুক্তি কার্যকর হয়েছে। এরপর সেই ভূখণ্ডে অভ্যন্তরীণ হিংসা বড় মাথাব্যথা বলে মনে করছে ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই ভয়াবহ সতর্কবার্তা বলে মনে করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার তিনি বলেছেন যে, হামাস "খুব খারাপ কয়েকটি গ্যাং-কে বের করে দিয়েছে এবং বেশ কয়েকজন গ্যাং সদস্যকে হত্যা করেছে। সত্যি বলতে, এটা আমাকে খুব একটা বিরক্ত করেনি। কিন্তু এরপর যেন আর কোনও রক্তপাত গাজায় না হয় তাই হামাসকে সতর্ক হতে হবে। হামাসের দায়িত্বহীন দাপট অব্যাহত থাকলে গাজায় শান্তি ফিরবে না।" 

?ref_src=twsrc%5Etfw">October 16, 2025

রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করা নিজের হুমকি কীভাবে অনুসরণ করবেন তা তিনি নিজে বা হোয়াইট হাউস খোলসা করেনি। এই সংক্রান্ত কোনও প্রশ্নের উত্তরও মেলেনি। কিন্তু ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন যে, বিধ্বস্ত ভূখণ্ডের ভেতরে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর বিরুদ্ধে হামাস যে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না, এসব বরদাস্ত করার জন্য তাঁর ধৈর্য খুবই কম। প্রেসিডেন্টের সাফ কথা, "অস্ত্র তুলে রাখতে হবে। যদি হামাস তা না করে, তাহলে আমরা ওদের নিরস্ত্র করব, এবং এটি দ্রুত এবং সম্ভবত হিংসাত্মকভাবেই ঘটবে।" 

১৮ বছর আগে গাজায় জঙ্গিরা ক্ষমতা দখল করার পর হামাস পরিচালিত পুলিশ উচ্চ মাত্রায় জননিরাপত্তা বজায় রেখেছিল এবং ভিন্নমত পোষণকারীদের উপরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ইজরায়েলি বাহিনী গাজার বিশাল এলাকা দখল করে এবং বিমান হামলা চালিয়ে হামাসের নিরাপত্তা বাহিনীকে নিশানা করে। ফলে হামাস পরিচালিত পুলিশ বাহিনী প্রায় বিলুপ্তির পথে। 

আরও পড়ুন-  আফগান মাটি থেকে পাকিস্তানকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে মারছে, কে এই ইসলামাবাদের নয়া শত্রু?

যুদ্ধবি্রতি কার্যকর হওয়ার পর ইজরায়েল সমর্থিত হামাস-বিরোধী কিছু গোষ্ঠী-সহ বেশ কিছু পরিবার এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী গাজায় ফিরেছিল। হামাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সদ্য ফিরে আসা মানুষগুলোর মানবিক সাহায্য ছিনতাই করা হয়েছে। লাভের জন্য সেগুলো বিক্রি করারও অভিযোগ উঠেছে। যা গাজায় অনাহার সংকট আরও বাড়িযে তুলবে বলে মনে আশঙ্কা।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রূপরেখা অনুসারে যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় জীবিত এবং মৃত সকল বন্দিকে সোমবার শেষ হওয়া সময়সীমার মধ্যে হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু চুক্তি অনুয়ায়ী তা না ঘটলে, হামাসকে মৃত বন্দিদের তথ্য দেওয়ার এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের দেহ হস্তান্তরের কথা বলা হয়েছিল। এই নির্দেশ পুরোপুরি কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ।

ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বুধবার বলেছেন যে, "ইজরায়েল কোনও আপস করবে না।" পাল্টা বন্দিদের মৃতদেহ ফেরৎ দেওয়ার বিষয়ে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে নির্ধারিত বিষয়গুলি পূরণ করার দাবি জানিয়েছেন হামাস। বুধবার এক বিবৃতিতে হামাসের সশস্ত্র শাখা জানিয়েছে যে, তারা যুদ্ধবিরতির শর্তাবলীকে সম্মান করেছে এবং তাদের কাছে থাকা বন্দিদের দেহাবশেষ ইতিমধ্যেই হস্তান্তর করেছে।