আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ব্রিটেন সফরে যাচ্ছেন। ২৩ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত চার দিনের বিদেশসফরে এর পর তিনি মলদ্বীপে যেতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের লক্ষ্য, ব্রিটেনের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করা এবং মলদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্কের মেরামত করা।

প্রধানমন্ত্রী ২৩ এবং ২৪ জুলাই ব্রিটেন থেকে তাঁর দুই দেশের সফর শুরু করবেন। তিনি ভারত-ব্রিটেন এফটিএ স্বাক্ষর করবেন। যা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী অগ্রগতি। এই চুক্তি ব্রিটেনে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ ভারতীয় পণ্যের উপর কর কমাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে হুইস্কি এবং গাড়ির মতো ব্রিটিশ পণ্য ভারতে বিক্রি করাও সহজ হবে।

ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে গত তিন বছর ধরে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছিল। যার মূল লক্ষ্য ছিল দেশীয় বাজারে প্রবেশাধিকার অর্জনের পথ মসৃণ করা এবং উভয় দেশের জন্য বাণিজ্য সহজ ও উন্নত করা।

আরও পড়ুন: বিশ্বের প্রথম প্লেন হাইজ্যাক হয়েছিল ৭৭ বছর আগে, কারা করেছিল এই দুঃসাহসিক কাজ

ভারত-ব্রিটেনের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ফলে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের বৈচিত্র্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। দুই দেশেরই লক্ষ্য হল একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা এবং বাণিজ্যে বিধিনিষেধ কমিয়ে সামগ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।

এরপর প্রধানমন্ত্রী মোদি ২৫ জুলাই দুই দিনের সফরে মালদ্বীপ যাবেন, যেখানে তিনি ৬০তম জাতীয় দিবস উদযাপনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জু প্রধানমন্ত্রী মোদিকে এই অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

মলদ্বীপের কিছু নেতার ‘ইন্ডিয়া আউট’ উস্কানি এবং মুইজ্জুর চীনপন্থী অবস্থানের কারণে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি হওয়ার পর থেকে এটিই হবে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দেশ সফর। মুইজ্জু এখন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চাইছেন।

আরও পড়ুন: বেতন পেতে দেরি, অফিসে রাজনীতির শিকার, বসের প্রেমের প্রস্তাব নাকচ করার ফল! প্রশ্ন তরুণীর

এই সফরটিকে দুই দেশের মধ্যে সমস্যাগুলি সমাধান, সহযোগিতা জোরদার এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে 'প্রতিবেশী প্রথম' নীতির প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি সর্বশেষ ২০১৯ সালের জুনে বৈঠকের জন্য মলদ্বীপ সফরে গিয়েছিলেন। ক্ষমতায় আসার পর মুইজ্জু গত বছরের অক্টোবরে ভারত সফর করেন, যা ছিল তাঁর প্রথম দ্বিপাক্ষিক ভারত সফর।

২০২৪ সালের গোড়ার দিকে, মালদ্বীপ বিমান চলাচলের প্ল্যাটফর্ম থেকে ভারতীয় সেনাদের বহিষ্কার করে এবং হেলিকপ্টার সংক্রান্ত চুক্তি স্থগিত করে। প্রধানমন্ত্রী মোদী যখন এক্স-এ লাক্ষাদ্বীপ পর্যটনের প্রচার করেন, তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক শুরু হয়। মালদ্বীপের তিন উপমন্ত্রী আপত্তিকর মন্তব্য করে প্রতিক্রিয়া জানান, যার ফলে সংকট আরও খারাপ হয়।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৫-১৬ জুন দুই দিনের সাইপ্রাস সফরে গিয়েছিলেন। যা গত দুই দশকে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফর। এটি মোদির তিন দেশের সফরের অংশ ছিল, যার মধ্যে কানাডা (জি৭ শীর্ষ সম্মেলন) এবং ক্রোয়েশিয়াও ছিল। এই সফর এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল যখন পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা চরমে। 'অপারেশন সিঁদুর'-এর পরে সেটিই ছিল মোদির প্রথম বিদেশ সফর।