আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতে প্রত্যর্পণের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন ২৬/১১ মুম্বই হামলায় অন্যতম অভিযুক্ত তাহা‌উর রানা। আর্জিতে রানা জানিয়েছেন, তাঁর দেশ, ধর্মীয় এবং সামাজিক পরিচয়ের কারণে তাকে ভারতে নির্যাতন করা হবে এবং হত্যা করা হবে।

আবেদনে বলা হয়েছে, যেহেতু তিনি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত একজন মুসলিম এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য, এর ফলে ভারতে তাকে নির্যাতন করা হতে পারে এবং তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থার কারণে তিনি মারাও যেতে পারেন। রানা দাবি করেছেন, তিনি অ্যাওর্টিক অ্যানিউরিজমে ভুগছেন যা যেকোনও সময় ফেটে যেতে পারে। এছাড়াও পারকিনসন রোগ এবং সম্ভাব্য মূত্রাশয় ক্যান্সারে ভুগছেন। তাঁর অভিযোগ, ভারত সরকার ক্রমশ স্বৈরাচারী হয়ে উঠছে। মানবাধিকার রিপোর্টের উল্লেখ করে ভারতের ধর্মীয় সংখ্যালঘু, বিশেষ করে মুসলিমদের উপর বৈষম্য এবং অত্যাচারে অভিযোগ এনেছেন রানা।

গত জানুয়ারিতে রানাকে ভারতে প্রত্যার্পণের অনুমতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার মামলায় পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক রানার যোগসূত্র খুঁজে পায় ভারত। এর পর থেকেই তাঁকে ভারতে আনার চেষ্টা চলছিল। এর আগে, ওয়াশিংটনের প্রাদেশিক আদালত, সান ফ্রান্সিসকোর আপিল আদালতে আপিল করেছিলেন রানা। কোথাও সুরাহা মেলেনি। সব শেষে সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। সেখানেও তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। ভারতে প্রত্যর্পণ না করার জন্য এটিই শেষ আইনি সুযোগ ছিল রানার।  

২০০৮ সালের নভেম্বরের জঙ্গি হামলায় ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে ছিলেন ছ’জন মার্কিন নাগরিকও। ওই হামলায় ডেভিড কোলম্যান হেডলির পাশাপাশি রানার জড়িত থাকার যোগসূত্র পাওয়া যায়। দোষী প্রমাণিত হয়েছেন তিনি। বর্তমানে আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি জেলে বন্দি রয়েছেন। প্রায় দেড় দশক আগে ওয়াশিংটনের কাছে আবেদন জানিয়েছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু তাতে সায় মেলেনি। আইনের নানা ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে বার বার প্রত্যর্পণ এড়িয়ে যাচ্ছিলেন।