আজকাল ওয়েবডেস্ক: শিশুদের ঘুম নিয়ে মা–বাবার চিন্তার অন্ত নেই। কেউ কেউ প্রায়ই বলেন, ‘আমার সন্তান সহজে ঘুমাতে চায় না।’ আবার কারও সন্তান ঘুমের মধ্যে ভয় পেয়ে চিৎকার করে। শিশুদের ঘুমের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। যার মধ্যে আছে স্লিপ টেরর, দুঃস্বপ্ন দেখা, ঘুমের মধ্যে হাঁটাহাঁটি, বিছানা ভেজানো, মাথা ঝাঁকানো ইত্যাদি। তবে ঘুমের মধ্যে কথা বলা বা হঠাৎ ঘুমের মধ্যে ঝাঁকি দেওয়া নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। এসব বেশ স্বাভাবিক।


স্লিপ টেররকে নাইট টেররও বলা হয়। সাধারণত ১ থেকে ৬ শতাংশ শিশুর ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা যায়। চার থেকে আট বছর বয়সী শিশুরা এই সমস্যায় বেশি ভোগে। সাধারণত রাতে ঘুমের প্রথম দিকে এটা হয়, যখন শিশু গভীর ঘুমে থাকে। অন্যদিকে দুঃস্বপ্ন শিশুরা দেখে ভোররাতের দিকে।


স্লিপ টেরর হলে শিশু ঘুম থেকে হঠাৎ জেগে যায়, তারপর অস্বাভাবিকভাবে কাঁদতে থাকে, রক্ত হিম করা চিৎকার দিয়ে ওঠে। এ সময় শিশুকে অস্বাভাবিক ভয়ার্ত দেখায়। অনেক সময় দেখা যায় শিশুর চোখ বড় বড় হয়ে যায়, অস্বাভাবিকভাবে ঘামতে থাকে, হৃৎস্পন্দন অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। শিশুকে খুব অস্থির দেখায়। এ সময় শিশুকে শান্ত করা যায় না, তা ছাড়া ঘুম ভেঙে গেলে তাকে কিছুটা বিভ্রান্ত আর দিশাহারা দেখায়। বেশির ভাগ শিশুই পরদিন মনে করতে পারে না তার কী হয়েছিল। আবার কেউ কেউ কল্পনা করে যে বড় দৈত্য, মাকড়সা কিংবা সাপ তাকে আক্রমণ করেছিল, যা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হয়েছিল।


ঘুমের মধ্যে এই ঘটনা অল্প কিছু মিনিট থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। কোনও কোনও শিশুর ক্ষেত্রে এই ঘটনা আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্লিপ টেরর কমে যেতে থাকে। দেখা যায় যে স্বাভাবিকভাবেই বয়ঃসন্ধিকাল হতে হতে এই সমস্যা চলে যায়। খুব অল্প শতাংশ ক্ষেত্রে ১৩ বছর বয়সের পরও স্লিপ টেরর থাকতে পারে।


স্লিপ টেরর নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে একধরনের খিঁচুনি আছে, যা রাতে ঘুমের মধ্যে হতে পারে। তাই শিশু এই ধরনের কোনও সমস্যায় ভুগলে তা নিশ্চিত হতে অবশ্যই একজন শিশু স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।