আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে দিল্লি আসতে পারেন। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের পর এই প্রথম পুতিন ভারত সফর আসতে চলেছেন। এই সময়ে, রাশিয়া ভারতের প্রচলিত এবং পারমাণবিক উভয় সাবমেরিন এবং দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের চুক্তি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সূত্রে খবর, রাশিয়া দ্বিতীয় আকুলা শ্রেণীর পারমাণবিক শক্তিচালিত আক্রমণাত্মক সাবমেরিন, কমপক্ষে ছ’টি কিলো শ্রেণীর সাবমেরিন এবং ১৫০০ কিলোমিটার পাল্লার ক্যালিবার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র লিজ এবং হস্তান্তরের প্রস্তাব দিতে পারে। বর্তমানে ভারতের ১৭টি সাবমেরিন রয়েছে, যার দুই-তৃতীয়াংশ ৮০-এর দশকে কেনা হয়েছিল। এই সাবমেরিনগুলি পুরানো হয়ে যাচ্ছে এবং সেগুলির আয়ু শেষ হয়ে আসছে। অতএব, ভারতের এখন নতুন সাবমেরিনের প্রয়োজন।

গত পাঁচ দশক ধরে রাশিয়া ভারতের বৃহত্তম প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহকারী। আজও ভারতের সামরিক সম্পদের ৬০% রাশিয়ায় উৎপাদিত। যার মধ্যে রয়েছে T-72 এবং T-90 ট্যাঙ্ক, কিলো ক্লাস সাবমেরিন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে SU-30MKI যুদ্ধবিমান। ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, যা ভারত সম্প্রতি অপারেশন সিন্দুরের সময় পাকিস্তানি বিমানঘাঁটিতে আক্রমণ করার জন্য ব্যবহার করেছিল, এটি রাশিয়া এবং ভারতের একটি যৌথ প্রকল্প। যদিও গত কয়েক বছরে ভারত রাশিয়ার উপর নির্ভরতা কমিয়েছে এবং ইজরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, ফ্রান্স এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের থেকে অস্ত্র কিনতে শুরু করেছে। তবুও রাশিয়া এখনও ভারতের বৃহত্তম প্রতিরক্ষা অংশীদার।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর পুতিনের এই সফর হবে তাঁর প্রথম ভারত সফর। গত বছরের জুলাই ২০২৪ সালে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ২২তম ভারত-রাশিয়া ডায়লগে অংশগ্রহণ করেছিলেন মোদি। তার পরেই পুতিনের এই সফর। এখন, ২৩তম ডায়লগের আগে, রাশিয়া ভারতকে এমন কিছু ক্ষেত্রে প্রস্তাব দিচ্ছে যেখানে আমেরিকা প্রতিযোগিতা করতে পারে না। যেমন পারমাণবিক সাবমেরিন, দূরপাল্লার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং S-500 বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। আমেরিকা আজ পর্যন্ত কোনও দেশকে তার পারমাণবিক সাবমেরিন বিক্রি বা লিজ দেয়নি। এর বাইরে, আমেরিকা তার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রটি কেবল ব্রিটেনকে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, রাশিয়া ভারতের জন্য একমাত্র সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য বিকল্প হিসেবে রয়ে গেছে। ১৫০০ কিলোমিটার পাল্লার ক্যালিবার ক্ষেপণাস্ত্রকে রাশিয়ার একটি বড় কৌশলগত প্রস্তাব হিসেবে বিবেচনা করা হয়।