আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঋণগ্রস্ত জাতীয় বিমান সংস্থা, পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) বিক্রির জন্য পাকিস্তান ২৩ ডিসেম্বর নতুন করে দরপত্র আহ্বান করতে চলেছে। গত বছর পাক সরকার এটি বিক্রির জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিল। কিন্তু আকর্ষণীয় প্রস্তাব পায়নি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) কর্মসূচির আওতায় ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের লোকসানের পিআইএ বিক্রি করার পরিকল্পনা করেছে পাকিস্তান।
শেহবাজ শরিফ সরকার গত বছর বিমান সংস্থাটি বিক্রি করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু ৬০ শতাংশ শেয়ারের জন্য একক দরদাতার কাছ থেকে মাত্র ১০ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি অফার পেয়েছিল, যা পাকিস্তানের দাবি ৮৫ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপির চেয়ে অনেক কম। বেসরকারিকরণ কমিশন ২০২৫ সালের এপ্রিলে প্রক্রিয়াটি পুনরায় শুরু করে এবং স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের এবং বিদেশীদের কাছ থেকে ৫১ থেকে ১০০ শতাংশ শেয়ারের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে।
এবার, শরিফ সরকার সম্পূর্ণ এয়ারলাইন্স বিক্রয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে এবং লিজ নেওয়া বিমানের উপর বিক্রয় কর বাতিল করেছে। পাশাপাশি, আইনি ও কর দাবি থেকে সীমিত সুরক্ষা প্রদান করেছে। বিমান সংস্থার প্রায় ৮০ শতাংশ ঋণ স্থানান্তরিত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক পিটিভি নিউজের এক্স-এ শেয়ার করা একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ জাতীয় বিমান সংস্থাটিকে বেসরকারীকরণের পরিকল্পনায় জড়িত কর্পোরেট গোষ্ঠী এবং কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেছেন।
শরিফের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে এটি বলা হয়েছে, “পিআইএ'র নিলাম ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে, যা সমস্ত মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। আমরা পিআইএ-র বেসরকারীকরণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং যোগ্যতা নিশ্চিত করছি।”
সে দেশের বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় বিমান সংস্থাটির বেসরকারীকরণের পদক্ষেপে অংশ নেওয়ার জন্য চারটি পাকিস্তানি সংস্থাকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফৌজি ফার্টিলাইজার, হাবিব রফিক, ইউনুস ব্রাদার্স এবং এয়ারব্লু জাতীয় বিমান সংস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারের জন্য দরপত্র আহ্বানে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ফৌজি ফার্টিলাইজার ফৌজি ফাউন্ডেশনের অধীনস্থ। যা পাকিস্তানের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসায়িক গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। ইন্ডিয়া টুডের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির ফৌজি ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পর্ষদে থাকা কোয়ার্টারমাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) নিয়োগ করেন। সামরিক বাহিনীর প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ফৌজি ফাউন্ডেশনের উপর মুনিরের পরোক্ষ প্রভাব রয়েছে।
অতিরিক্ত কর্মী এবং দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে পিআইএ-র দীর্ঘ আর্থিক জট পরিচালনাগত সমস্যার সৃষ্টি করে, যার ফলে লোকসান হয় এবং এর বেসরকারীকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বছরের শেষ নাগাদ পিআইএ-র বিডিং প্রক্রিয়া শেষ করা পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভবিষ্যতের অর্থ প্রদানের জন্য এটি প্রয়োজনীয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড ৮ ডিসেম্বর পরবর্তী ১.২ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ দেওয়ার জন্য বৈঠকে বসবে।
