আজকাল ওয়েবডেস্ক: সীমান্তে যুদ্ধের আবহ। কাঁপছে পাকিস্তান। তার মধ্যেই দিল্লিকে ভয় দেখাতে পাক মন্ত্রীদের গরমাগরম বুলির কমতি নেই। প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফের কথায়, সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তান প্রাপ্য জল আটকাতে ভারত সিন্ধু নদের উপর কোনও বাঁধ তৈরি করলে তা ভেঙে ধ্বংস করে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার কয়েক ঘন্টা পরেই ভারত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা করেছিল। এই সিন্ধু নদের জলেই পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ কৃষিকাজ হয়ে থাকে। 

এক পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আশিফকে জিজ্ঞাস করা হয়েছিল যে, ভারত পাকিস্তানের প্রাপ্য দল সিন্ধু নদের উপর বাঁধ নির্মাের তোড়জোড় করছে বলে শোনা গিয়েছে। জবাবে, আসিফ জানিয়েছেন, ভারতের তৈরি যেকোনও নির্মাণই 'ভারতের আগ্রাসন' বলে বিবেচিত হবে। তাঁর কথায়, "গুলি, বন্দুক ব্যবহারেই কেবল আগ্রাসন হয় না। আগ্রাসনের আরও একটা রূপ জল আটকে দেওয়া। সেটা করলে খিদে-তেষ্টায় মানুষকে মরতে হবে।।" তিনি জানিয়েছেন যে, সিন্ধু চুক্তি নিয়ে দিল্লির একতরফা সিদ্ধান্ত ও সমস্যার কথা আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরছে ইসলামাবাদ।  

আসিফের মন্তব্যকে  "ফাঁকা হুমকি" বলে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র শাহনওয়াজ হুসেন। তাঁর দাবি, এই ধরনের "উস্কানিমূলক মন্তব্য" পাকিস্তানিদের ভয়ের বহিঃপ্রকাশ। হুসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, "খোয়াজা আসিফ দৃশ্যতই ভীত। যদিও তিনি পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী, তবুও তাঁর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তিনি কেবল একজন 'বিবৃতিমন্ত্রী', ক্রমাগত ফাঁকা হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। পাকিস্তানিদের মধ্যে ভয় স্পষ্ট। তাঁরা রাতের ঘুম হারাম করে ফেলছে।"

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যুর পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। স্থগিত করা হয়েছে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। ওই চুক্তি অনুসারে, সিন্ধু নদ এবং তার পশ্চিম তীরের উপনদীগুলির জল পায় পাকিস্তান। এই জলের উপরে গোটা দেশের ৮০ শতাংশ কৃষি নির্ভর করে আছে। ভারত চুক্তি স্থগিত করার কথা জানালে জল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে পাকিস্তানে। কারণ এই নদীগুলির উৎস ভারতেই। 

সিন্ধুর জল পাকিস্তানকে দেওয়া বন্ধ করতে সরকার ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য ব্যবস্থার সমস্ত আইনি এবং প্রযুক্তিগত দিকগুলি খতিয়ে দেখছে। চুক্তি স্থগিত করার ফলে ভারত সিন্ধু প্রণালীর জল কীভাবে ব্যবহার করবে সে সম্পর্কে আরও বিকল্প পেয়েছে। আপাতত, ভারত জল প্রবাহ বন্ধ করতে পারে না, কারণ পাকিস্তানকে বরাদ্দ করা তিনটি নদীর উপর জলাধারের সুবিধা নেই। যেসব বাঁধগুলি রয়েছে সেগুলির জল আটকে দেওয়ার বা অন্য দিকে সরানোর ক্ষমতা নেই।

দিল্লি সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের ঘোষণার পর গত সপ্তাহে, পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রধান বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে উত্তেজনা বাড়িয়েছিলেন। বলেছিলেন, "আমাদের জল অথবা ওদের (ভারত)  রক্ত ​​সিন্ধু নদীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে।"

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন যে, পাকিস্তানের জল প্রবাহ বন্ধ করার বা অন্য দিকে সরানোর যেকোনও প্রচেষ্টা "যুদ্ধের পদক্ষেপ" হিসেবে বিবেচিত হবে।

 

?ref_src=twsrc%5Etfw">May 3, 2025