আজকাল ওয়েবডেস্ক: সেনার শাসন, তারপর? নেপালের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কুরশিতে বসবেন কে? মঙ্গলবার থেকেই ভাসছিল নানা নাম। তবে প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য, জেন জি-রা ভার্চুয়াল বৈঠক করে নেপালের পরবর্তী অন্তবর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন নেপালের প্রাক্তন বিচারপতি সুশীলা কারকিকে।
প্রবল বিক্ষোভের মাঝেই মঙ্গলবার ভেঙে পড়ে ওলি সরকার। একে একে মন্ত্রীদের পদত্যাগের পর, খোদ ওলিও পদত্যাগ করেন। তারপর থেকে একেবারে বাংলাদেশের ছাঁচেই নেপালের দায়িত্ব তুলে নিয়েছে সেনাবাহিনী। নেপালের সেনাপ্রধান অশোকরাজ সিগদেলের একটি বক্তব্য সামনে আসার পর থেকে জোর চর্চা হয়েছে নেপালে রাজতন্ত্র ফিরে আসা নিয়েও।
তবে বুধবার বিকেলে, স্থানীয় এবং একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে তথ্য, কয়েক হাজার জেন-জি আন্দোলনকারী ভার্চুয়াল বৈঠকের মাধ্যমে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে সুশীলা কারকির নাম জানিয়েছেন। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, জেন জি আন্দোলনের হোতারা তাদের এজেন্ডা তৈরির জন্য একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। তাদের আলোচনা কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহ এবং প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে ঘিরেই ছিল মূলত। জানা গিয়েছে, বর্তমানে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত না থাকার কারণে, কারকির নামেই গ্রিণ সিগন্যাল। অর্থাৎ, আন্দোলনের পরে, একই বিষয়েও বাংলাদেশের ছাঁচ হিমালয়ের দেশে। সে দেশেও এবার অন্তবর্তী সরকার!
আরও পড়ুন: ভারতের দোরগড়ায় বিক্ষোভের আঁচ, চরম সতর্কতা জারি যোগী রাজ্যে, বন্ধ সীমান্ত, স্তব্ধ বাণিজ্যও!...
বালেন্দ্র শাহের নাম মঙ্গলবার থেকেই ঘুরছিল নেপালের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। কাঠমান্ডুর ১৫তম মেয়র বালেন্দ্র শাহ (বালেন শাহ নামেও পরিচিত) কেবল একজন রাজনীতিবিদই নন, একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এবং ব়্যাপারও। অনেক তরুণ নেপালিদের কাছে তিনি আশা এবং পরিবর্তনের প্রতিনিধি। বালেন মেয়র পদে জয়লাভ করার পর, মানুষ তাকে ভবিষ্যতে একজন সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে শুরু করেন।
ব়্যাপার থেকে রাজনীতিবিদে পরিণত শাহ বিক্ষোভকারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন আগেই। একটি ফেসবুক পোস্টে, কাঠমান্ডুর মেয়র বলেছেন যে আয়োজকদের দ্বারা নির্ধারিত বয়সের সীমার কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি, তিনি বিশ্বাস করেন যে তাঁদের কণ্ঠস্বর শোনা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন যে যদিও তিনি সশরীরে উপস্থিত থাকবেন না, তবুও তার ‘পূর্ণ সমর্থন’ তরুণদের সঙ্গে থাকবেন। ১৯৯০ সালে কাঠমান্ডুতে জন্মগ্রহণ বালেন্দ্রর। তিনি নেপালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অধ্যয়ন করেন এবং পরে ভারতের বিশ্বেশ্বরায়া টেকনোলজিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। সূত্রের খবর, শাহের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন জেন-জি আন্দোলনকারীরা। তবে তিনি তাতে সাড়া দেননি।
জানা যায়, প্রস্তাব সুশীলার কাছে গেলে, তিনি অন্তত হাজারজনের সমর্থন চেয়েছিলেন তাঁর নামের পাশে। তথ্য, তার আড়াইগুণ বেশি যুব, বিক্ষোভকারীদের সমর্থন পেয়েছেন তিনি।
কে এই সুশীলা কারকি?
সুশীলা কারকি, বয়স ৭২।
১৯৫২ সালের ৭ জুন, মোরাং জেলার বিরাটনগরে জন্ম।
নেপালের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। ২০১৬ সালে নেপাল সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির পদে বসেন।
১১ জুলাই, ২০১৬ থেকে ৬ জুন, ২০১৭ পর্যন্ত, প্রধান বিচারপতি থাকাকালীন, তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর রায় দান করেছেন।
পুলিশ নিয়োগে অনিয়ম, দ্রুত বিচার আদালত প্রতিষ্ঠা এবং বেশ কয়েকটি উচ্চ-প্রোফাইল দুর্নীতির মামলার বিষয়ে তার সিদ্ধান্তের জন্য তিনি সুপরিচিত হয়ে ওঠেন।
দীর্ঘদিন ধরে জড়িত নানা সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে।
