আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবি নিয়ে চলতি বছরেই উত্তাল হয়েছিল। মাসখানেক কাটেনি, তার মাঝেই ফের উত্তপ্ত নেপাল। চলল গুলি, বিক্ষভ ব্যারিকেড টপকে ঢুকে গেল সংসদে, মৃত্যু মিছিল।
একসঙ্গে একগুচ্ছ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা। তারপর থেকেই পুঞ্জীভূত ক্ষোভ একেবারে প্রকাশ্যে, পথে। যদিও অনেকের মত, কেবল সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ হওয়াই এই ব্যাপক সঞ্চারিত ক্ষোভের কারণ নয়। এর পিছনে রয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে বারে বারে উঠে আসে সে দেশের সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-সহ নানা অভযোগ। সব মিলিয়ে রবিবার থেকেই উত্তপ্ত নেপাল। পরিস্থতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে সোমবার।
#WATCH | Nepal | Protest turned violent in Kathmandu as people staged a massive protest against the ban on Facebook, Instagram, WhatsApp and other social media sites, leading to clashes between police and protesters. pic.twitter.com/YWNj3R0wUG
— ANI (@ANI)Tweet by @ANI
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন সূত্রে খবর, সোমবার সকাল থেকেই বাড়ছিল ক্ষোভের আঁচ। বেলা বাড়তেই বিক্ষোভের সামনে থাকা জেন জি-রা ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্টে ঢুকে পড়ে। তারপর থেকেই আরও উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জানা গিয়েছে, নেপালে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত আট জনের। কোনও কোনও সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন সূত্রে খবর, প্রাণ গিয়েছে ন' জনের। আহত অন্তত ৮০জন।
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টের দরজায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর, তাদের দেখলেই গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশ এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়েছে তাদের লক্ষ্য করে। পথে, প্রাণ হাতে নিয়ে তাদের স্লোগান, দুর্নীতি বন্ধ হোক, সোশ্যাল মিডিয়া-অ্যাপ নয়।
আরও পড়ুন: জেরুসালেমে বন্দুকবাজের হানায় চার জন নিহত, আহত অন্তত ১৫ জন, ‘জঙ্গি’ নিকেশ হয়েছে জানাল ইজরায়েল পুলিশ
দ্য কাঠমান্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুসারে, কিছু বিক্ষোভকারী এমনকি সংসদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে, কেউ কেউ গাছের ডাল এবং জলের বোতল ছুড়ে সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে থাকে। পরিস্থিতি খারাপ হলে, পুলিশ জলকামান, টিয়ারগ্যাস এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করে।
বিক্ষোভের পরিস্থিতিতে প্রাথমিকভাবে রাজধানীর বানেশ্বর এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছিল। নতুন বিধিনিষেধে বেশকিছু বদল করা হয়েছে। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রপতির বাসভবন (শীতল নিবাস), উপ-রাষ্ট্রপতির বাসভবন, লৈনচৌর, মহারাজগঞ্জ, সিংহ দরবারের চারপাশে, বালুওয়াতারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন এবং সংলগ্ন এলাকাগুলির মতো বেশ কয়েকটি উচ্চ-নিরাপত্তা অঞ্চলে কারফিউ জারি। প্রধান জেলা কর্মকর্তা ছাবিলাল রিজাল জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে বারোটা থেকে রাত ১০:০০ টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। এই অঞ্চলগুলির মধ্যে জনসাধারণের চলাচল, জমায়েত, বিক্ষোভ বা ঘেরাও কার্যক্রম কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নেপাল ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং এক্স -সহ ২৬টি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করেছে। এই প্ল্যাটফর্মগুলিকে নেপালের তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকে সাত দিনের মধ্যে নথিভুক্ত করার কথা ছিল, কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি তা করেনি। মন্ত্রক সংস্থাগুলিকে নাম নথিুভুক্ত করার জন্য ২৮ আগস্ট থেকে সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। এই সময়সীমা বুধবার রাতে শেষ হয়ে গিয়েছে। নেপালের প্রসাশনিক কর্তারা জানিয়েছেন যে, নিষেধাজ্ঞা তাৎক্ষণিকভাবে সারা দেশে কার্যকর হবে এবং মন্ত্রক সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে চিঠি দেওয়া শুরু করেছে। সরকার ইতিমধ্যেই নিয়ম মেনে না চলা প্ল্যাটফর্মগুলিকে স্থগিত করার বিষয়ে সতর্ক করেছিল।
