আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২৬/১১ মুম্বই জঙ্গি হামলার অন্যতম মূল অভিযুক্ত তাহাওয়ুর হুসেইন রানাকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে আমেরিকা। ৬৪ বছর বয়সি এই পাকিস্তানি-জন্মসূত্রে কানাডিয়ান নাগরিককে আজ একটি বিশেষ বিমানে করে দিল্লিতে আনা হয়েছে এবং তাঁকে পাটিয়ালা হাউজ আদালতে পেশ করা হবে।
তবে মুম্বই হামলার মামলার বাইরেও রানার বিরুদ্ধে রয়েছে আরেকটি জঘন্য আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ—‘দ্য মিকি মাউস প্রজেক্ট’।
কি ছিল এই ‘মিকি মাউস প্রজেক্ট’?
শিশুসুলভ নামে লুকিয়ে ছিল ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসের পরিকল্পনা। ২০০৫ সালে ডেনমার্কের পত্রিকা Jyllands-Posten ইসলাম ধর্মের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কার্টুন প্রকাশ করে, যা সারা বিশ্বে মুসলিম সমাজের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ সৃষ্টি করে।
তবে এই ক্ষোভকে রক্তাক্ত প্রতিশোধে পরিণত করতে চেয়েছিল তাহাওয়ুর রানা ও তাঁর সহযোগী ডেভিড হেডলি। হেডলির সাক্ষ্যে উঠে এসেছে, তারা কোপেনহেগেনের ওই পত্রিকার অফিসে বিস্ফোরক ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালানোর ছক কষেছিল। মূল লক্ষ্য ছিলেন কার্টুনিস্ট কার্ট ভেস্টারগার্ড ও সংস্কৃতি সম্পাদক ফ্লেমিং রোজ।
এফবিআই-এর মতে, হামলার উদ্দেশ্য ছিল পত্রিকার কর্মীদের শিরচ্ছেদ করে সেই মাথা কোপেনহেগেনের রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া—একটা বিশ্বজোড়া আতঙ্কের বার্তা ছড়ানোর লক্ষ্যে।
পরিকল্পনা কেন ভেস্তে যায়?
পাকিস্তানি সেনার প্রাক্তন ক্যাডেট ও চিকিৎসক রানা পরে কানাডার নাগরিকত্ব গ্রহণ করে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে বসবাস শুরু করেন। ‘মিকি মাউস প্রজেক্ট’ নামটি ব্যবহার করা হয়েছিল এই ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসের প্রকৃত রূপ আড়াল করতে।
তবে ২০০৯ সালের অক্টোবরে ডেভিড হেডলির গ্রেপ্তারির পর পরিকল্পনাটি মুখ থুবড়ে পড়ে। পরে হেডলি আমেরিকান আদালতে দোষ স্বীকার করে, মুম্বই হামলার ক্ষেত্রেও তাঁর ‘রেইকি’ করার কথা জানায়।
তাহাওয়ুর রানার প্রত্যার্পণ ভারতের কাছে এক কূটনৈতিক ও সন্ত্রাসবিরোধী সাফল্য। এখন দেখার, দিল্লির আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে চলা বিচারপর্ব কোন দিকে মোড় নেয়।
