আজকাল ওয়েবডেস্ক: নিউ ইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানী সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে গিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠক থেকে ফেরার পর তিনি জানান, সেখানে সবচেয়ে বিস্ময়কর জিনিস ছিল একটি নথি, যার নাম—‘UFC at the Oval Office in the White House’। প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন এটি হয়তো একটি রসিকতা। পরে দেখতে পান, এটি কোনও কৌতুক নয়—বরং হোয়াইট হাউসের সাউথ লনে UFC বা অল্টিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি ফোল্ডার।

মামদানী জানান, নথিটিতে বিস্তারিত আঁকা ছিল কীভাবে অষ্টভুজ আকৃতির ফাইটিং রিং সেট করা হবে, কতটা জায়গা লাগবে এবং পুরো ইভেন্ট কীভাবে সাজানো হবে। তিনি আরও বলেন, তিনি বিস্মিত হয়ে একটি UFC কফি টেবিল বইও দেখেছেন—যা ট্রাম্পের ব্যক্তিগত পড়ার জিনিসগুলোর একটি হিসেবে রাখা ছিল।

এই UFC ইভেন্টটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আগামী ১৪ জুন ২০২৬ সালে, যা একইসঙ্গে ট্রাম্পের ৮০তম জন্মদিন এবং আমেরিকার ২৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ট্রাম্প গত জুলাই মাসে আইওয়া স্টেট ফেয়ারে এ বিষয়ে প্রথম ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। পরে UFC প্রধান ডানা হোয়াইট জানান, বিশাল জনসমাগম নয়—বরং নিরাপত্তাজনিত কারণে মাত্র ৫,০০০ দর্শককে সীমিতভাবে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। এর আগে ট্রাম্প অনুমান করেছিলেন ২৫,০০০ দর্শক উপস্থিত থাকতে পারবেন।

ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ ছিল মামদানীর প্রথম, নির্বাচনে জয়ের পর। প্রচারাভিযানে দুজনই একে অপরকে কটাক্ষ করেছিলেন। কিন্তু হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প তার ইমেজের বিপরীত আচরণ দেখিয়ে মামদানীকে উষ্ণ ভাষায় স্বাগত জানান। এমনকি তিনি হেসে বলেন, মামদানী আগে তাকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলেছেন—সেটিও তিনি ব্যক্তিগতভাবে নেননি।

তবে সাক্ষাৎকার শেষে NBC News-কে মামদানী স্পষ্টভাবে জানান—সমালোচনা তিনি প্রত্যাহার করছেন না। তার ভাষায়, “রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে আমি যা বলেছি, এখনো তাই মনে করি। তিনি স্বৈরাচারী প্রবণতার নেতাই।”

মামদানী বলেন, ব্যক্তিগত মতবিরোধের মধ্যেও আলোচনার গুরুত্ব রয়েছে। “আমি হোয়াইট হাউসে গিয়েছি কোনও বক্তব্য দেওয়ার জন্য নয়—নিউ ইয়র্কবাসীর সমস্যাগুলো সামনে তুলে ধরতে,”—তিনি বলেন। আলোচনায় তিনি আবাসন সমস্যা, অপর্যাপ্ত গণপরিবহন, অভিবাসী নিরাপত্তা এবং আয়-বৈষম্য নিয়ে কথা বলেছেন।

যদিও রাজনৈতিক অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীত, বৈঠকটি নতুন সম্পর্কের দ্বার খুলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে UFC–র মতো একটি রক্তগরম করা লড়াই হোয়াইট হাউস প্রাঙ্গণে বসতে চলেছে—এ বিষয়টি আমেরিকান রাজনীতিতেই সবচেয়ে অদ্ভুত এবং আলোচিত বিষয় হয়ে উঠছে।