আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইজরায়েলি সেনাবাহিনী বুধবার জানিয়েছে, তারা গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি পুনরায় কার্যকর করতে শুরু করেছে। ইজরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১০৪ জন নিহত হয়েছে। উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। ইজরায়েল দাবি করেছে, হামাসের এক আক্রমণে এক ইজরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে।


ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, মঙ্গলবার রাতে হামলাটি চালানো হয় “একজন সৈন্য নিহত হওয়ার পর”, যা ছিল হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়া। বিবৃতিতে জানানো হয়, চুক্তি মেনে চলা অব্যাহত থাকবে, তবে যে কোনো লঙ্ঘনের কঠোর জবাব দেওয়া হবে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে ছিলেন পাঁচজন বুরেইজ শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে, চারজন গাজা সিটির সাবরা এলাকায় একটি ভবনে, এবং পাঁচজন খান ইউনিসে একটি গাড়িতে।


ইজরায়েলি সেনা কর্তৃপক্ষ বুধবার নিহত সৈন্যের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, হামাস “হলুদ রেখা” নামে পরিচিত মোতায়েন সীমার মধ্যে অবস্থানরত সেনাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। এই সীমা যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে নির্ধারিত।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চুক্তিটি ১০ অক্টোবর কার্যকর হয়েছিল, যা দুই বছরের দীর্ঘ সংঘাতের অবসান ঘটায়। সেই যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইজরায়েলে সংঘটিত হামলার মাধ্যমে।

আরও পড়ুন: জলের তলায় রাক্ষুসে জেলিফিস, ভিডিও দেখে সকলেই মুগ্ধ


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধবিরতি “বিপদের মুখে নয়”। এদিন সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমার জানা মতে, তারা একজন ইজরায়েলি সৈন্যকে হত্যা করেছে, তাই ইজরায়েল পাল্টা আঘাত করেছে এবং করা উচিত। এমন হলে তাদের জবাব দেওয়া দরকার।” ট্রাম্প আরও বলেন, “কিছুই এই যুদ্ধবিরতিকে বিপন্ন করতে পারবে না। হামাস মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির একটি ছোট অংশ মাত্র, তাদের আচরণ করতে হবে।”


অন্যদিকে, হামাস রাফাহ এলাকায় ইজরায়েলি সেনাদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং জানিয়েছে, তারা এখনো যুদ্ধবিরতির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। এই চুক্তির অধীনে হামাস সমস্ত জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে প্রায় ২,০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। পাশাপাশি ইজরায়েল তার সেনা প্রত্যাহার করে এবং আক্রমণ বন্ধ করতে রাজি হয়।


চুক্তি অনুযায়ী, হামাসকে সকল মৃত জিম্মির দেহাবশেষও হস্তান্তর করতে হবে। ইজরায়েল অভিযোগ করেছে, হামাস প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত করছে এবং বেশিরভাগ দেহাবশেষের অবস্থান সম্পর্কে অবগত।


ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সোমবার জানান, সম্প্রতি হামাস যে মানবদেহের অবশিষ্টাংশ হস্তান্তর করেছে, তা ৭ অক্টোবরের হামলায় নিহত এক ইজরায়েলির। সেনাবাহিনীর দাবি, হামাস ইচ্ছাকৃতভাবে সেই দেহাবশেষ একটি খনিস্থলে পুঁতে রাখে এবং পরে আন্তর্জাতিক রেড ক্রসকে খবর দেয়, যাতে “দেহ অনুসন্ধানের ভুয়া ধারণা” তৈরি হয়।


ইজরায়েলি বাহিনী ১৪ মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে তিনজন লোককে একটি সাদা ব্যাগ মাটিতে রেখে ঢেকে দিতে দেখা যায়। 
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি জানায়, তাদের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগে ঘটনাটি সাজানো হয়েছে তা তারা জানত না। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলে, “যখন এত পরিবার তাদের প্রিয়জনের খবরের অপেক্ষায়, তখন এ ধরনের মিথ্যা পুনরুদ্ধার অগ্রহণযোগ্য।”