আজকাল ওয়েবডেস্ক: ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিনি নিজে দু' দেশের মধ্যের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন। মাঝে যদিও যুদ্ধে জড়িয়েও পড়েছিলেন। তবে এবার তথ্য, ইরান দাবি করছে ইজরায়েলের সঙ্গে নাকি যুদ্ধবিরতি হয়নি। যে কোনও মুহূর্তে ফের শুরু হতে পারে যুদ্ধ। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনের তথ্য, ইরানের সামরিক, বিচার বিভাগীয় এবং সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক দিনগুলিতে সতর্ক করে দিয়েছেন যে ইজরায়েলের সঙ্গে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে, একজন শীর্ষ কমান্ডার বলেছেন যে "যে কোনও মুহূর্তে" যুদ্ধ শুরু হতে পারে।
বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগর জাহাঙ্গীর, সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির সিনিয়র সামরিক উপদেষ্টা ইয়াহিয়া রহিম সাফাভি এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ নাসিরজাদেহ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে বলেছেন যে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী সতর্ক রয়েছে এবং যদি শত্রুতা আবার শুরু হয় তবে সংঘাতের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের হুমকিকে থোড়াই পরোয়া, ভারতকে আরও সস্তায় তেল কেনার প্রস্তাব দিল রাশিয়া...
তথ্য, বুধবার, নাসিরজাদেহ জানিয়েছেন, ইরান আগের তুলনায় অনেক বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে, যা যে কোনও সম্ভাব্য ইজরায়েলি অভিযানের জবাবে ব্যবহার করা হবে। তিনি বলেন, 'আজ আমরা আগের তুলনায় অনেক ভালো ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি এবং মোতায়েন করেছি, এবং যদি ইহুদিবাদী শত্রু আরেকটি অভিযান শুরু করে, তাহলে আমরা অবশ্যই এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ব্যবহার করব।'
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেইয়ের সিনিয়র সামরিক উপদেষ্টা ইয়াহিয়া রহিম সাফাভি বলেন। 'আমাদের অবশ্যই সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমাদের এবং ইসরায়েল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনও প্রোটোকল নেই। কোনও যুদ্ধবিরতি নেই।'
এর আগে, জুন মাসে খামেনেইয়ের দেশ সাফ জানিয়ে দেয়, নেতানিয়াহু, ট্রাম্প 'ঈশ্বরের শত্রু'। এখন ওঁদের সময় আফশোস করার। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি ইরানে। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ইরানের শীর্ষস্থানীয় শিয়া ধর্মগুরু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে একটি 'ফতোয়া' বা ধর্মীয় ফরমান জারি করেছেন। যেখানে তাঁদের 'ঈশ্বরের শত্রু' বলে অভিহিত করা হয়েছে। গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ নাসের মাকারেম শিরাজির ফরমানে বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এবং ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের নেতৃত্বকে হুমকি দেওয়ার জন্য আমেরিকান ও ইসরায়েলি নেতাদের উৎখাত করার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়। ফতোয়ায় স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ফতোয়ায় মুসলিম বা ইসলামী রাষ্ট্রগুলির পক্ষ থেকে ঐ শত্রুর প্রতি যে কোনও সহযোগিতা বা সমর্থন হারাম বা নিষিদ্ধ। বিশ্বজুড়ে সকল মুসলমানের জন্য এই শত্রুদের তাঁদের কথা এবং ভুলের জন্য অনুতপ্ত হতে হবে এবার।‘ইরানের ধর্মগুরুদের ফতোয়া জারি করার ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও বিশ্ব এই ধরনের সিদ্ধান্ত দেখেছে। কিন্তু এবার ফতোয়া সরাসরি দুই রাষ্ট্রনেতার বিরুদ্ধে।
ঘটনা প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধের আবহেই সরাসরি ঢুকে পড়ে আমেরিকা। ইজরায়েলের পক্ষ নিয়ে একই দিনে ইরানের তিনটি পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালায় ট্রাম্পের সেনাবাহিনী। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হওয়ার মাঝেই ট্রাম্প আবার দুই দেশকেই যুদ্ধবিরতিতে আহ্বান জানান। যদিও প্রথম থেকেই ইরান কড়া ভাষায় সাফ জানিয়েছে, কোনও পরিস্থিতিতেই ইরান ট্রাম্পের কথা শুনে চলবে না।
