আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডরসেটের এক নামী এএ রোসেট পুরস্কারপ্রাপ্ত রেস্তোরাঁয় চাঞ্চল্যকর ঘটনা। বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করতে আসা এক দম্পতির উপর নেশাগ্রস্ত এক মহিলার অশোভন আচরণ ও হামলার অভিযোগ উঠল। মামলায় দোষ স্বীকার করলেও অভিযুক্তকে জেল দেওয়া হয়নি, ফলে ভুক্তভোগীর ক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত জুলাই মাসে, যখন ৪৪ বছর বয়সি সামান্থা উইলিয়ামসন, স্যালিসবারির এভন টেরেসের বাসিন্দা, ক্যাপ্টেন’স ক্লাব হোটেল অ্যান্ড স্পা-র একটি রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত মদ্যপান করেন। পুলিশ ও আদালতের নথি অনুসারে, তিনি হঠাৎ করে এক অচেনা পুরুষ ভোজনরসিকের কোলে বসে অশ্লীল মন্তব্য করেন—“আমি তোমার বড় বাঁশের উপর বসতে চাই।” হতভম্ব ওই ব্যক্তি তৎক্ষণাৎ তাঁকে সরিয়ে দেন। পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় যখন ভুক্তভোগীর স্ত্রী প্রতিবাদ করলে উইলিয়ামসন টেবিল থেকে পানীয় ও জ্বলন্ত মোমবাতি ছুঁড়ে ফেলেন, যা ছিটকে পড়ে ভুক্তভোগীর স্ত্রীর গায়ে।
এতেও থেমে থাকেননি তিনি। ভুক্তভোগী তাঁকে দূরে সরানোর চেষ্টা করলে উভয়েই মাটিতে পড়ে যান। এরপর নেশাগ্রস্ত উইলিয়ামসন “পাগলের মতো আচরণ” শুরু করেন, ভুক্তভোগীর উপর থুতু ফেলেন ও আঁচড়ে তাঁর রক্ত বের করেন। ওই সময় দম্পতি ৪০ বছরের দাম্পত্য জীবনের বিশেষ দিন ও ক্যানসারমুক্তির আনন্দ উদযাপন করছিলেন। ভুক্তভোগীর বক্তব্য, “আমরা সৌজন্যবশত তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য ট্যাক্সি ডাকতে চেয়েছিলাম। অথচ সাহায্য করতে গিয়ে এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হলো। ভেঙে পড়া কাঁচ, ভেজা পোশাক, আর মানসিক আঘাত—এই রাতটা আমরা কোনোদিন ভুলব না।”
মামলার শুনানিতে প্রসিকিউশন জানায়, উইলিয়ামসন ওই রাতে রেস্তোরাঁয় একাধিকবার বচসায় জড়ান এবং অশ্লীল ভাষায় চেঁচামেচি করেন। প্রতিরক্ষা পক্ষ দাবি করে, ব্যক্তিগত জীবনের সংকট ও মদ্যপানের কারণে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন। তাঁর আইনজীবী বলেন, অভিযুক্ত একজন ভঙ্গুর মানসিক অবস্থার মহিলা, যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্যাতনমূলক সম্পর্ক থেকে পালিয়ে এসেছেন। ম্যাজিস্ট্রেট জজ পল বুটি রায়ে মন্তব্য করেন, “আমি বুঝতে পারছি না কী ভর করেছিল আপনাকে। প্রথমে অশালীন আচরণ, পরে ঝগড়া, থুতু মারা ও আঁচড়ানো—সব মিলিয়ে ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুতর। তবে জেল নয়, কমিউনিটি শাস্তিই যথেষ্ট হবে।”
অভিযুক্তকে ছয় মাসের কমিউনিটি অর্ডার, রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বাড়িতে থাকার শর্তে ইলেকট্রনিক ট্যাগ এবং ভুক্তভোগীকে ১,০০০ পাউন্ড ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। রায়ের পর ভুক্তভোগী স্পষ্টভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন—“এটা খুবই অন্যায়। যদি আমি তাঁর জায়গায় থাকতাম, পুলিশ আমাকে সোজা সেলে নিয়ে যেত। অথচ তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হলো। আমি ভাবছি ব্যক্তিগতভাবে নতুন করে মামলা করব।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের জন্য এটা ছিল একটি বিশেষ সফর। ১,২০০ পাউন্ড খরচ করে আমরা আনন্দ করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু জীবনের অন্যতম সুখের সময় পরিণত হলো আতঙ্কের অভিজ্ঞতায়।” এই ঘটনায় মহিলাকে জেল না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্থানীয় মহলে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগী দম্পতির বক্তব্য—“আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত, নারী বা পুরুষ যেই হোক না কেন।”
