আজকাল ওয়েবডেস্ক: জার্মানির বিখ্যাত অটোবান (Autobahn) সড়কে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। একটি চলন্ত গাড়ির ভেতরে এক জুটি প্রকাশ্যে যৌনকর্মে লিপ্ত অবস্থায় ধরা পড়েছে। ঘটনাটি ঘটে সোমবার, ৩ নভেম্বর, ডর্টমুন্ডের দিকে যাচ্ছিল এমন একটি ফোর্ড (Ford) গাড়িতে। খবর দিয়েছে দ্য সান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাড়িটি ঘণ্টায় প্রায় ৯০ মাইল (প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার) বেগে চলছিল এবং লাগাতার লেন পরিবর্তন করছিল। একজন চালক, যিনি ঘটনাস্থল দিয়ে যাচ্ছিলেন, পুলিশকে জানান যে ৩৭ বছর বয়সী পুরুষ চালক এবং ৩৩ বছর বয়সী এক মহিলাকে তিনি “স্পষ্টতই যৌনকর্মে লিপ্ত” অবস্থায় দেখেছেন।

ঘটনার ভয়াবহতা আরও বাড়ে যখন গাড়িটি হঠাৎ ডানদিকে সরে গিয়ে পাশের একটি ট্রাককে বাধ্য করে জরুরি লেনে চলে যেতে, ফলে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। সৌভাগ্যক্রমে বড় কোনো সংঘর্ষ ঘটেনি, তবে সামান্য ব্যবধানে এড়ানো যায় একটি সম্ভাব্য ভয়াবহ দুর্ঘটনা।

পরে পুলিশ গাড়িটিকে আটক করে মুনস্টারের (Münster) বাইরে একটি সার্ভিস স্টেশনে। চালককে সঙ্গে সঙ্গেই হেফাজতে নেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে জার্মান পেনাল কোডের ধারা ৩১৫বি (Section 315b of the German Penal Code) অনুযায়ী বিপজ্জনকভাবে সড়ক ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই ধারায় দোষী প্রমাণিত হলে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

অন্যদিকে, মহিলা যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, জার্মানির অটোবান সড়ক বিশ্বব্যাপী পরিচিত তার দীর্ঘ অংশজুড়ে গতিসীমা না থাকার জন্য। তবে সব অংশেই এমন নয়—প্রায় ৩০ শতাংশ রাস্তায় স্পিড লিমিট নির্ধারিত আছে, বিশেষত উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যস্ত এলাকাগুলোতে। এছাড়া আরও প্রায় ৯ শতাংশ অংশে স্বয়ংক্রিয় গতিনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু রয়েছে, যাতে সড়ক নিরাপত্তা বজায় থাকে।

তবুও, অটোবানে দ্রুতগতির গাড়ি চালানো নিয়ে বিপজ্জনক কাণ্ড নতুন নয়। এর আগে জুলাই মাসেও একজন চালককে ২০০ মাইল প্রতি ঘণ্টা (প্রায় ৩২২ কিমি/ঘণ্টা) গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য ধরা হয়। সে সময় ঘটনাটি ঘটে বার্লিনের পশ্চিমে বার্গ শহরের কাছাকাছি এ২ মহাসড়কে। পুলিশ তাকে ৯০০ ইউরো (প্রায় ₹৯২,০০০) জরিমানা করে, তিন মাসের জন্য ড্রাইভিং নিষিদ্ধ করে এবং তার লাইসেন্সে দুইটি পেনাল্টি পয়েন্ট যোগ করে।

বর্তমান ঘটনাটি জার্মান সমাজে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। সড়ক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “অটোবানে গতি নিয়ন্ত্রণ না থাকা অনেক সময় চালকদের বেপরোয়া করে তোলে। এই ঘটনার মতো বিপজ্জনক আচরণ অন্যদের প্রাণহানির কারণ হতে পারত।” পুলিশ ইতিমধ্যেই ওই চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে এবং জানিয়েছে যে তদন্ত সম্পন্ন হলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।