আজকাল ওয়েবডেস্ক: মাত্র চার ঘণ্টার পরিচয়ের পর বিয়ে—এমন সিদ্ধান্তে স্তব্ধ হয়ে গেছে চীনের সোশ্যাল মিডিয়া। কিন্তু আরও বড় ধাক্কা এসেছে এরপর: বিয়ের এক মাসের মধ্যেই নববধূ উধাও করে ফেলেছেন স্বামীর সঞ্চিত ২ লক্ষ ৪০ হাজার ইউয়ান, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৮–৩০ লক্ষ টাকার সমান। হুনান প্রদেশের হেংইয়াং শহরের ৪০ বছর বয়সী হুয়াং ঝংচেং ২১ আগস্ট সকালে একটি ব্লাইন্ড ডেট-এ অংশ নেন। বিশেষত্ব হল—এই এক মহিলার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে নয়জন আলাদা ম্যাচমেকার একসঙ্গে হাজির হন।

হুয়াং স্থানীয় মিডিয়াকে জানান, “আমি ভাবছিলাম একজন ম্যাচমেকারের সঙ্গে দেখা হবে, কিন্তু যাওয়ার পথে আরও আটজন হঠাৎ এসে যোগ দেন। মোট নয়জন আমাকে একই মেয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন।” সেদিনই দু’জন দেখা করেন এবং আশ্চর্যের বিষয়, মাত্র চার ঘণ্টা পর তারা বিয়ের রেজিস্ট্রেশনও সম্পন্ন করেন। হুয়াং বলেন, “ও বলল, সবকিছু আজই করতে হবে। বিকেল ৫টার মধ্যে আমরা বিবাহ সম্পন্ন  করলাম। সব এত দ্রুত ঘটছিল যে আমি যেন স্বপ্ন দেখছিলাম।”

বিয়ের পর প্রথম রাতেই তারা একটি হোটেলে থাকেন, এবং সেটিই ছিল তাদের একমাত্র শারীরিক ঘনিষ্ঠতা। এরপর আর কখনও স্ত্রী তাকে স্পর্শ করতে দেননি বলে দাবি করেন তিনি। বিয়ের দুইদিন পর স্ত্রী হুয়াংকে বলেন, তিনি যেন গুয়াংডং প্রদেশে কাজ করতে যান এবং নিয়মিত তাকে টাকা পাঠান। তিনি নানা অজুহাত দেখিয়ে টাকা “ধার” নেওয়ার অনুরোধ করতে থাকেন—কখনো উৎসব, কখনো মেয়ের পড়াশোনা, আবার কখনো ব্যক্তিগত প্রয়োজনের কথা বলে।

হুয়াং জানান, “ও প্রায় কখনোই আমার মেসেজের জবাব দিত না। কিন্তু যখনই দিত, সেটা টাকার জন্যই হতো। কিসি উৎসবে আমি তাকে ১,৩১৪ ইউয়ানের WeChat রেড প্যাকেট পাঠিয়েছিলাম—চীনে এই সংখ্যার মানে ‘চিরকাল’। সে শুধু লিখল—‘ধন্যবাদ স্বামী’।” পরবর্তীতে তিনি স্ত্রী-র সন্তানের জন্য ২,৩০০ ইউয়ান দিয়ে একটি কম্পিউটারও কিনে দেন। মাত্র ১৮ দিনের মধ্যেই—২১ আগস্ট থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত—তার পুরো সঞ্চয় শেষ হয়ে যায়।

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই চীনা সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। হাজারো ব্যবহারকারী এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন। একজন মন্তব্য করেন, “এত দ্রুত বিয়ে করার সাহস সত্যিই অবিশ্বাস্য। হয়তো তারা একে অপরের বাড়ির  ঠিকানাও জানে না, অথচ বিয়ে করছে!”

আরেকজন লিখেছেন, “মাদক ব্যবসায়ীরাও হয়তো এমন কাহিনি শুনে কাঁদবে।” তৃতীয় একটি মন্তব্যে দাবি করা হয়েছে, “এটি স্পষ্ট প্রতারণা। ওই নয়জন ম্যাচমেকারকেও আইনি বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।” এখনো পর্যন্ত ওই মহিলাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। হুয়াং আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঘটনাটি এখন চীনের “বিবাহ প্রতারণা” আলোচনাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে—বিশেষত দ্রুত বিয়ে এবং সোশ্যাল মিডিয়া-চালিত ম্যাচমেকিং সংস্কৃতি নিয়ে।