আজকাল ওয়েবডেস্ক: জার্মানির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ছোট শহর বোহমতে। সম্প্রতি এই শহরে ঘটে গেল এক অত্যাশ্চর্য মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। সূত্রে জানা গিয়েছে একটি গাড়ি রাস্তা দিয়ে যেতে গিয়ে আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এরপর গাড়িটি ছিটকে গিয়ে প্রথমে একটি পার্ক করা গাড়িকে ধাক্কা দেয়। তারপর সেখান থেকে এক বাড়ির বাগানের ভেতর ঢুকে যায়।সেখানে খেলতে থাকা একটি শিশুকে আঘাত করে গাড়িটি। এখানেই থেমে নেই৷ শেষপর্যন্ত এই গাড়ি প্রচন্ড জোরে ছিটকে একটি খামারের ছাদের ওপর গিয়ে পড়ে। এই ভয়াবহ ঘটনার জেরে মাত্র ৭ বছরের এক শিশু ও এক যুবতী মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। ঘটনায় আরও কয়েকজন আঘাত পেয়েছেন।

আন্তজার্তিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, বেপরোয়া এই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ৪২ বছর বয়সী এক প্রৌঢ়। তাঁর গাড়িতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী, তাঁদের দুই ছেলে (যাদের বয়স যথাক্রমে ১১ ও ১২ বছর), এবং আরও একজন ১৩ বছর বয়সী তরুণ। খবর মারফত জানা গিয়েছে শহরের একটি আবাসিক এলাকায় গাড়িটি হঠাৎ করে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। প্রথমে একটি পার্ক করা গাড়ির সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষ হয়। এরপর সেটি একটি ঝোপ ভেঙে পাশের একটি বাড়ির বাগানে ঢুকে পড়ে। সেই বাগানে একটি ট্রাম্পোলিনে খেলছিল সাত বছর বয়সী এক শিশু। বেপরোয়া গাড়িটি সরাসরি ধাক্কা দেয় সেখানে। এরপরই এক অসমান ভূমির ওপর দিয়ে ছিটকে গিয়ে আকাশে উড়াল দেয়। সোজা পাশের একটি খামারের ছাদে গিয়ে পড়ে। জানা গিয়েছে মাটি থেকে প্রায় ৩ মিটার উচ্চতায় ছিল ওই ছাদ। 

সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার ফলে শিশু গুরুতর আঘাত পায়। এমতাবস্থায় শিশুকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গুরুতর আহত হন চালকের স্ত্রীও, যিনি গাড়িতে ছিলেন। গাড়িতে থাকা অন্য তিনজন, চালক নিজে, তাঁর দুই ছেলে এবং ১৩ বছর বয়সী এক তরুণ, সকলেই কমবেশি আঘাত পান।

ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত উদ্ধারকারী বাহিনী পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। এরপর বেশ খানিক্ষণ উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ডজনখানেক অ্যাম্বুলেন্স। একাধিক দমকলকর্মী সহ দুটি হেলিকপ্টার অ্যাম্বুলেন্সও পৌঁছয়। উদ্ধারকারী দল ছাদের ওপর উঠে গাড়িটি কাটার চেষ্টা শুরু করে। তছনছ হয়ে যাওয়া খেলার সরঞ্জাম ও ছাদের অংশ সরিয়ে উদ্ধার কাজ চলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার জেরে গোটা এলাকা জুড়ে ভীত সন্ত্রস্ত সকলে। অনেকেই বিস্ময়ে স্থির হয়ে যান। ছাদে গাড়ি উঠে যাওয়ার এই মর্মান্তিক দৃশ্য বেশিরভাগ স্থানীয়দের কাছেই একেবারে অবিশ্বাস্য ও শোকস্তব্ধ ঘটনা ছিল বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

পরবর্তীতে একটি বড় ক্রেনের সাহায্যে ছাদ থেকে গাড়িটিকে নামিয়ে আনা হয়। পুলিশ সেটিকে বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায়। স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। কীভাবে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, গাড়ির উচ্চ গতি এবং রাস্তার পরিস্থিতি দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হতে পারে। তবে তদন্তের পরেই নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাবে বলে বর্তমানে জানা গিয়েছে। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও পর্যবেক্ষণ করে দেখছেন কর্মীরা৷ 

সর্বোপরি এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। খবর, আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় শহরের বাসিন্দারা একত্রিত হচ্ছেন।