আজকাল ওয়েবডেস্ক: সামনেই বিয়ের মরশুম। উৎসবের আবহে যার প্রস্তুতিও চলছে জোরকদমে। এই আবহেই দেদার বিক্রি হচ্ছে নাবালিকা 'কনে'। এই প্রথমবার নয়। বছরের পর বছর চীনে নাবালিকা 'কনে' বিক্রি করছে পাকিস্তান। যে পাচারের কাহিনি অতীতেও প্রকাশ্যে এসেছে। তথ্য ফাঁস হলেও কারবার কিন্তু থামেনি। এখনও চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব অটুট রাখতে, নির্ভরশীল হয়েই থাকে পাকিস্তান। দিনের পর দিন প্রকাশ্যে চীনে পাচার করছে নাবালিকা 'কনে'। 

 

কোথায় বসে 'কনের বাজার'? 

 

পাকিস্তানের কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় বসে না এই 'কনের বাজার'। যখন তখন যেকোনও জায়গা থেকেই নাবালিকাদের পাচার করে দেওয়া হয় চীনে। তাও আবার কনে সাজিয়ে। তথ্য অনুযায়ী, এই পাচার কাজ চলে মূলত পাকিস্তান ও চীনের সীমান্ত এলাকায়। ওই সীমান্ত এলাকার গ্রাম থেকেই বিক্রি করে দেওয়া হয় নাবালিকাদের। 

 

কোন ধর্মের চাহিদা বেশি? 

 

তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান ও চীনের সীমান্তে বসবাসকারী মূলত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নাবালিকাদের বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাচার করে দেওয়া হয়। মূলত ১২ থেকে ১৮ বছরের নাবালিকাদের পাচার করে দেয় পরিবার। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে চীনে বিক্রি করে দিলেও, পরিণতি হয় ভয়ঙ্কর। চীনের জনসংখ্যায় পুরুষের আধিক্য বেশি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মোট জনসংখ্যায় মহিলাদের তুলনায় ৩৫ মিলিয়ন বেশি পুরুষ রয়েছে। তাই চাহিদাও থাকে তুঙ্গে। 

 

আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর দিল্লি, দীপাবলির পরেই মাত্রাছাড়া দূষণে প্রথম দশের তালিকায় কলকাতা, মুম্বইও

 

কত দামে বিক্রি করা হয় নাবালিকা কনে? 

 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বয়স, সৌন্দর্য, সুস্বাস্থ্য ও সুন্দরী নাবালিকাদের চাহিদা থাকে বেশি। সেই অনুযায়ীই দাম নিয়ে কিনে নেওয়া হয় এই কনেদের। সবমিলিয়ে ভারতীয় মুদ্রায় দুই থেকে নয় লক্ষ টাকা মূল্য ওঠে। চাহিদা পূরণ হলেই বেশি দামে চীনের বাসিন্দারা কিনে নেন পাকিস্তানের খ্রিস্টান নাবালিকাদের। 

 

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে চরম যৌন নির্যাতন: 

 

সমাজকর্মীরা জানিয়েছেন, দারিদ্র্য ঘোচাতেই চীনের ধনী পরিবারের হাতে মেয়েদের তুলে দেয় পরিবার। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই এই পাচারের সঙ্গে জড়িত। মোটা অঙ্কের বিনিময়ে মেয়েদের বিক্রি করে দেয় তারা। 

তবে শুরুতে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও, ধনী পরিবারের সদস্য হওয়ার টোপ দিলেও নাবালিকাদের চরম পরিণতি হয়। এই নাবালিকাদের অধিকাংশ পুরুষ যৌন দাসী হিসেবে ব্যবহার করেন। কখনও বাড়ির পরিচারিকা হিসেবেও কাজ করান। বিয়ের নামে চলে নির্মম যৌন অত্যাচার। 

 

শুধু নাবালিকাদের নয়, অর্থের প্রয়োজনে তাদের ভাই-বোনদেরও সঙ্গে পাঠিয়ে দেয় চীনে। কখনও কখনও পরিবার সঙ্গে যায় ভিন দেশে। কিন্তু কিছুদিন থেকেই ফিরে আসে পাকিস্তানে। নাবালিকারা যাতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে না পড়ে, সেই কারণেই কিছুদিন সঙ্গ দেয় তাদের। পরিসংখ্যান বলছে, শুধুমাত্র ২০১৯ সালেই বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৬২৯ জন নাবালিকাকে চীনে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। 

 

কীভাবে চলে পাচার কাজ? 

 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে আরও জানা গেছে, গোটা ঘটনাটি বেআইনিভাবে সংগঠিত হয়। নকল পাসপোর্ট, ভিসা দেখিয়ে চীনের সীমান্ত পার করানো হয়। কখনও আবার আজারবাইজান হয়েও চীনে পাচার করা হয় নাবালিকাদের। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কনে বিক্রি করলেও, আসলে যৌন দাসী হয়েই আজীবন থাকতে হয় ওই নাবালিকাদের।