আজকাল ওয়েবডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডি বিচে বন্দুকবাজের হামলার ঘটনায় জড়িত হামলাকারীদের একজন সাজিদ আক্রম হায়দরাবাদের বাসিন্দা ছিলেন। তেলেঙ্গানা পুলিশ মঙ্গলবার জানিয়েছে, ১৯৯৮ সালে তিনি হায়দরাবাদ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, সাজিদের কাছে ভারতীয় পাসপোর্ট থাকলেও তাঁর ছেলে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক।
গত রবিবার সাজিদ তাঁর ছেলে নাভিদ আক্রমকে সঙ্গে নিয়ে হানুক্কা উদযাপনকারী ইহুদিদের লক্ষ্য এলোপাথাড়ি গুলি চালান। এই হামলায় ১৫ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়। পুলিশের গুলিতে সাজিদের মৃত্যু হয়। তেলেঙ্গানা পুলিশের ডিজিপির পক্ষ থেকে জারি করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাজিদ ও নাভিদের উগ্রপন্থী হয়ে ওঠার নেপথ্যে যে কারণগুলি কাজ করেছে, সেগুলির সঙ্গে ভারত বা তেলেঙ্গানার কোনও স্থানীয় প্রভাবের কোনও সম্পর্ক আছে বলে মনে হয় না।
সাজিদ আকরামের পরিবারের সদস্যরা দু’টি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, একজন খ্রিস্টান নারীকে বিয়ে করার কারণে তারা বহু বছর আগেই সাজিদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। তেলেঙ্গানা পুলিশ জানিয়েছে, ১৯৯৮ সালে ভারত ছাড়ার আগে ভারতে থাকাকালীন সাজিদের বিরুদ্ধে কোনও পুলিশি রেকর্ড ছিল না। পুলিশ আরও জানিয়েছে, ২৭ বছরে তিনি মাত্র ছ’বার ভারত সফর করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করার আগে সাজিদ ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত ভেনেরা গ্রোসোকে বিয়ে করেন। নাভিদ ছাড়াও এই দম্পতির একটি মেয়েও রয়েছে।
হায়দরাবাদের বাসিন্দা সাজিদের ভাই দ্য নিউজ মিনিটকে জানিয়েছেন যে, সাজিদ ২৫ বছরেরও বেশি আগে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান এবং পরে একজন খ্রিস্টান মহিলাকে বিয়ে করেন। এই সিদ্ধান্তের কারণে পরিবার তার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলে। তাঁর ভাইয়ের আরও অভিযোগ, সাজিদ তাঁদের অসুস্থ আশি বছর বয়সী মায়ের খোঁজও নেননি।
দ্য নিউজ মিনিটকে একটি সরকারি সূত্র জানিয়েছে যে, সাজিদের বাবা বহু বছর আগে সৌদি আরব থেকে ফিরে এসে হায়দরাবাদে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। তথ্য অনুসারে, প্রায় একই সময়ে ১৯৯৮ সালে সাজিদ ছাত্র ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। হায়দরাবাদে সাজিদের পরিবারে অন্যান্য সদস্যরা এখন তদন্তের আওতায় রয়েছেন।
গত ৩০ বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সংঘটিত সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার নেপথ্যে এই বাবা-ছেলের জুটিই জড়িত। হানুক্কা উৎসব পালনরত ইহুদিদের লক্ষ্য করে চালানো এই হামলায় ১০ বছর বয়সী এক বালিকা এবং হিটলারের হলোকাস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া ৮৭ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।
