আজকাল ওয়েবডেস্ক: গণ অভ্যুত্থান। এই ঘটনা ইতিহাসের দিকে তাকালে বহুবার দেখতে পাওয়া যাবে। কিন্তু অতি সম্প্রতি যে দুই ঘটনা ঘটে গিয়েছে দুই দেশে, আন্দোলন-বিক্ষোভের ধারা তাদের পৃথক হলেও, মিল রয়ে গেল কোথাও। সোমবারের বিকেলের ছবি অন্তত মনে করাচ্ছে সেকথাই।
এক শ্রীলঙ্কা, দুই বাংলাদেশ। একটা ঘটনা ২০২২-এর, অন্যটি ২০২৪-এর। ২০২২ সালে বিক্ষোভ, অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মাঝেই বিক্ষোভকারীরা দখল নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির বাসভবন। সেখানে বিক্ষোভকারীরা নিজেদের নানা মুহূর্ত শেয়ার করেন সমাজমাধ্যমে। কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কেউ বা আয়েশ করছেন ছাদে।
ঠিক ২ বছর পর, ২০২৪ সালের আগস্ট মাস। ৮ আগস্ট, সোমবার বিকেলে দেখা গেল একেবারে এক ছবি। হাসিনা গণভবন ছাড়ার পরেই সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে ঢুকে পড়েন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। সেই ফুটেজগুলির সত্যতা আজকাল ডট ইন যাচাই না করলেও ইতিমধ্যে সে দেশের সংবাদ মাধ্যম বেশ কিছু ভিডিও সামনে এনেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন এই মহূর্তে বিক্ষোভকারীদের দখলে। কেউ কেউ সমাজমাধ্যমে নিজেদের ছবিও পোস্ট করেছেন। কেউ রান্নাঘরে, কেউ বড় বিছানায় শুয়ে। কেউ খাবার বের করছেন। প্রকাশ করছেন তাঁদের জয়ের উল্লাস।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মন্ত্রিসভার সব সদস্যের পদত্যাগের এক দফা কর্মসূচি নিয়ে রবিবার পথে নামেন বৈষম্য বিরোধী বিক্ষোভকারীরা। সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনের ঢাকা সহ দেশের নানা প্রান্তে দিনভর চলে সংঘর্ষ। প্রায় যায় শতাধিক বিক্ষোভকারীর। সোমবার বিক্ষোভকারীদের কর্মসূচি ছিল লং মার্চ টু ঢাকা। পরিস্থিতি আরও জটিল হয় বেলা গড়াতেই।
সোমবার দুপুরেই গণভবনের সামনে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। দুপুরে বোন রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে গণভবন এবং তার পরেই দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। তার কিছুক্ষণ পরেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন সে দেশের সেনা প্রধান। তাতে ওয়াকার-উজ-জামান জানিয়ে দেন, দেশে সেনা-শাসনের কথা। জানান, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই গঠন হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অর্থাৎ স্পষ্ট হয়ে যায় হাসিনার পদত্যাগ করেছেন। উত্তাল বাংলাদেশে ভাঙচুর করা হয় বঙ্গবন্ধুর মূর্তিও। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিয়েছে সেনাবাহিনি।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, নিজের বাসভবনে সপরিবারে খুন হন বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান।
