আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষণার পরেই সব দল নির্বাচনী প্রস্তুতির তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে। এ বারের নির্বাচনে প্রথম বার লড়াই করবে প্রশান্ত কিশোরের জন সুরজ পার্টি। ভোটকৌশলী তথা রাজনীতিবিদ পিকে জানিয়েছেন, এই সপ্তাহেই তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে। এর পরেই জল্পনা তৈরি হয়েছে যে, কোন আসন থেকে লড়াই করবেন তিনি।

গত মাসে একটি সাক্ষাৎকারে পিকে বলেছিলেন যে তিনি তাঁর নিজ আসন কারগাহার বা রাঘোপুর থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। কারগাহার আসনটি রোহতাস জেলার অন্তর্গত এবং বর্তমানে কংগ্রেসের সন্তোষ কুমার মিশ্রের দখলে রয়েছে। তিনি বলেন, “দলের অন্দরে আলোচনা চলছে, এবং যদি সম্মিলিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে আমিও নির্বাচনে নামব, তাহলে যেমনটি আমি সেই সাক্ষাৎকারে বলেছিলাম, কারগাহার অথবা রাঘোপুর থেকেই লড়বো।” 

যদি ভোটকৌশলী রাঘোপুর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তাহলে তিনি বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দলের দায়িত্বে থাকা তেজস্বী যাদবের মুখোমুখি হবেন। রাঘোপুর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক বার্তাও দেবেন পিকে। বৈশালী জেলার এই আসনটি আরজেডির ঘাঁটি। যা এর আগে আরজেডির প্রতিষ্ঠাতা লালু প্রসাদ যাদব এবং তাঁর স্ত্রী এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবীর দখলে ছিল। এখন সেখানে তেজস্বী প্রতিনিধিত্ব করছেন। গত তিন দশকে, আরজেডি রাঘোপুরে কেবল একটি রাজ্য নির্বাচনে হেরেছে। ২০১০ সালে জেডিইউর সতীশ কুমার যাদব রাবড়ি দেবীকে পরাজিত করেছিলেন।

আরও পড়ুন: নভেম্বরে দু'দফায় ভোট, ভারতের নির্বাচনের ইতিহাসে সবচেয়ে স্বচ্ছ ভোট হবে বিহারে? বড় দাবি কমিশনের

তাই যদি পিকে রাঘোপুর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তাহলে তেজস্বীর ঘাঁটিতে দাঁড়িয়ে তাঁকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে, পিকের জন্য লড়াইটি খুব কঠিনও হবে। কারণ, আরজেডি মর্যাদার লড়াইয়ে জয়লাভের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। তবে, কারগাহারকে বেছে নেওয়া আরও নিরাপদ হবে। আসনটি কেবল ২০০৮ সালে তৈরি হয়েছিল এবং এটি এখনও পর্যন্ত তিনটি বিধানসভা নির্বাচনে দেখেছে। তিনটিতে জেডিইউ দু’বার এবং কংগ্রেস একবার জিতেছে।

২০২২ সালে একটি রাজনৈতিক যাত্রার সাফল্য দেখে পিকে দাবি করেছিলেন, জন সুরজ পার্টির জন্য জনতার এই সমর্থন ভোটের ফলাফলে প্রতিফলিত হবে। যদিও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের দাবি, আসন্ন নির্বাচনে ফ্লপ হবে জন সুরজ পার্টি।

কেউ কেউ প্রশান্ত কিশোরকে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে তুলনা করেছেন এবং বলেছেন যে বিহারের রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগের তালিকাটি রাজনীতিতে পা রাখার জন্য একটি মরিয়া প্রচেষ্টা।

সোমবার বিকেল ৪টের পরেই বিহার ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নভেম্বরে দু’দফায় ভোট হবে বিহারে। ৬ এবং ১১ নভেম্বর হবে ভোটগ্রহণ। ফলাফল ঘোষণা ১৪ নভেম্বর। বিহারে গত বিধানসভা ভোট, অর্থাৎ ২০২০-এর ভোটগ্রহণ তিনটি দফায় হয়েছিল। প্রথম দফা ২৮ অক্টোবর, ২০২০, দ্বিতীয় দফা ৩ নভেম্বর, ২০২০ এবং তৃতীয় দফা ৭ নভেম্বর, ২০২০ তারিখে হয়েছিল। ভোট গণনা হয়েছিল ১০ নভেম্বর।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুসারে, বিহারে ৭.৪৩ কোটি ভোটার রয়েছে, যার মধ্যে ৩.৯২ কোটি পুরুষ ভোটার এবং ৩.৫১ জন মহিলা ভোটার রয়েছে। রাজ্যে নতুন ভোটার হয়েছেন ১৪ লক্ষ।