আজকাল ওয়েবডেস্ক: আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন এ কথা ঘোষণা করেছে। ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের ফলে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর এই প্রথম নির্বাচন হতে চলেছে ভারতের প্রতিবেশী দেশে।
বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসিরউদ্দিন দেশের উদ্দেশে দেওয়া একটি ভাষণের মাধ্যমে এই ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বকে দেখাতে প্রস্তুত যে তারা একটি ‘অবাধ ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন’ পরিচালনা করতে পারে।
বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে নাসিরুদ্দিন জানিয়েছেন, ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। জাতীয় সংসদের নির্বাচন এবং গণভোট একই বুথে পৃথক ব্যালটে হবে। রাত থেকেই শুরু হবে গণনা।
এর পাশাপাশি, নাসিরউদ্দিন নাগরিকদের ভুয়ো খবর ও গুজবের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং এগুলোকে নির্বাচনের আগে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করেছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিশ্চিত করেছেন যে, সাধারণ নির্বাচন এবং জুলাই সনদের গণভোটও আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে। মোট ৩০০টি সংসদীয় আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি। রিটার্নিং অফিসারদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ১১ জানুয়ারি এবং আপিল নিষ্পত্তি হবে ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনী প্রচার শুরু হবে ২২ জানুয়ারি, প্রচার শেষ হবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টায়।
এই বছর নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লক্ষের বেশি। প্রবাসী বাংলাদেশীরাও পোস্টাল ব্যালচের মাধ্যমে ভোটদানের সুযোগ পাবেন। এখনও পর্যন্ত তিন লক্ষের বেশি প্রবাসী ভোটার ভোট দেওয়ার জন্য নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা শুক্রবার থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বহু দিন ধরেই নির্বাচনের দাবি করে আসছিল বিএনপি, জামাত-সহ দলগুলি। গত ৬ জুন দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহম্মদ ইউনূস জানিয়েছিলেন, ২০২৬ সালের এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পর ১৩ জনু লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ইউনূসের বৈঠকে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ব্যাপারে সহমতে পৌঁছনো সম্ভব হয়।
কোটা-বিরোধী আন্দোলনে প্রবল ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পড়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লিগ সরকারের পতন হয়। দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান হাসিনা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পায়। প্রধান উপদেষ্টা হন ইউনূস। সেই সরকার দায়িত্বগ্রহণের ১৬ মাস পর নির্বাচনের দিন ঘোষিত হল বাংলাদেশে।
