আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির ২০৩০ সালে অবসর গ্রহণের পরও দেশ শাসন করার পরিকল্পনা করছেন বলে জানা গিয়েছে। দেশের শাসনব্যবস্থায় ‘স্থিতিশীলতা’ নিশ্চিত করার জন্য ‘শৃঙ্খলার ধারাবাহিকতা’ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে ১০ বছরের পরিকল্পনা করেছেন।
আসিম মুনির কীভাবে পাকিস্তান শাসন করার পরিকল্পনা করছেন?
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মুরিতে নওয়াজ শরিফের ব্যক্তিগত ফার্মহাউসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ এবং আইএসআই-এর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল অসিম মালিকের গোপন বৈঠকে আসিম মুনিরের ১০ বছরের ‘শৃঙ্খলার ধারাবাহিকতা’ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ঐক্যমত্য তৈরি হয়েছে।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, মুনিরের পরিকল্পনায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এবং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন অসামরিক সরকারের মধ্যে একটি চুক্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। যাতে তারা ‘হাইব্রিড গভর্নেন্স’ মডেলের অধীনে দেশের বিষয়গুলি পরিচালনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে একত্রিত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রস্তাবিত পরিকল্পনাটি মুনিরকে পাকিস্তানের কার্যত শাসক করে তুলবে এবং ২০৩০ সালে অবসর গ্রহণের পর ইসলামাবাদের উপর সেনাবাহিনীর আধিপত্য নিশ্চিত করবে।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর এই রহস্যময় স্থানে পৌঁছনোর পরেই সমস্ত ইলেকট্রনিক ডিভাইস অচল হয়ে যায়, কেন?
সূত্রমতে, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে সামরিক নিয়োগ সহ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নওয়াজ শরিফ, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ এবং সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের মধ্যে রাজনৈতিক-সামরিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নেওয়া হবে।

পাকিস্তান সেনাপ্রধান হিসেবে ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের মেয়াদ এই বছরের নভেম্বরে শেষ হচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে যে পাকিস্তান সেনা আইন ১৯৫২-এ সংশোধনী আনার পর পাঁচ বছরের জন্য তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি করা হবে।
নওয়াজ শরিফ কেন জড়িত?
বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বড় ভাই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ সেনাপ্রধানের পরিকল্পনাকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন কারণ এটি নিশ্চিত করবে যে সরকারি ক্ষমতা শরিফ পরিবারের মধ্যেই থাকবে। তাঁর ছোট ভাই সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং তাঁর মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ পাকিস্তানের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রদেশ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হবেন।
ইমরান খানের কী হবে?
ভূ-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে মুনিরের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা ইমরান খানের রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ করে দিতে পারে। এই পরিকল্পনা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার আশায় জল ঢালতে পারে। এর পাশাপাশি ইমরানে ক্ষমতায় ফিরে আসার উচ্চাকাঙ্ক্ষার অবসান ঘটানোর উপায় হিসেবে কাজ করবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈঠকে ইমরান খানের মামলা নিয়েও আলোচনা হয়েছিল এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে কারাবন্দী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে কোনও ধরণের ছাড় বা রাজনৈতিক ছাড় দেওয়া হবে না।
কুখ্যাত আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় যথাক্রমে ১৪ এবং ৭ বছরের কারাদণ্ডের পর ইমরান খান এবং তাঁর বর্তমান স্ত্রী বুশরা বিবি দুর্নীতির অভিযোগে জেলে রয়েছেন। খান এবং তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১৯০ মিলিয়ন পাউন্ডের অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে এবং অভিযোগগুলির মধ্যে রয়েছে অর্থ পাচার এবং সরকারি তহবিল তছরুপও।
১৯৯২ সালের আইসিসি বিশ্বকাপ জয়ী পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক খান, আগস্ট ২০১৮ থেকে এপ্রিল ২০২২ পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
