আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্কুলের মধ্যে আচমকাই আর্তচিৎকার খুদে পড়ুয়াদের। ভয়ে, আতঙ্কে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে তারা। এরপরই কান্নাকাটি। তারপরেই পড়িমরি করে স্কুল থেকে ছুটে পালাল পড়ুয়ারা। কারণ? স্কুলের মধ্যে অশরীরী আত্মার মতো একজনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছিল তারা।
নির্জন এলাকায়, নিরিবিলি পরিবেশে ঘোরাঘুরির জন্য বিদেশি পর্যটকেরা এশিয়ার ছোটখাটো দেশ বেছে নেন। যেমন, লাওস। যেখানে সারাবছর পর্যটকদের আনাগোনা খুব একটা থাকে না। হাতেনাতে পর্যটক আসেন। তাই বছরের যেকোনও সময় নিরিবিলি পরিবেশে সময় উপভোগ করতে পারেন তাঁরা।
সম্প্রতি লাওসের এক স্কুলে বিদেশি পর্যটককে দেখেই খুদে পড়ুয়াদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ফর্সা ধবধবে এক বিদেশিনী লাওসের এক স্কুলে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে খুদে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। ভাব জমানোর চেষ্টা করতে গিয়েই বিপত্তি ঘটে।
বিদেশি মহিলা পর্যটকের গায়ের চামড়া দেখেই তাঁকে ভূত মনে হয়েছিল খুদে পড়ুয়াদের। স্কুলে ওই বিদেশিনীকে দেখেই ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করে সকলে। আতঙ্কে স্কুল থেকে পালিয়েও যায়। এমনকী মহিলা পর্যটককে দেখেই স্কুলের মধ্যেই অনেকে লুকিয়ে থাকে।
ঘটনাটি ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়াতেও জোর চর্চা। অনেকেরই ধারণা, বিদেশি পর্যটকদের আচরণের কারণেই হয়তো আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে শিশুরাও আতঙ্কে থাকে। আগে থেকেই আতঙ্কিত না হলে, এমন আচরণ করা যায় না। আবার অনেকেরই মনে হয়েছে, ফর্সা ধবধবে বলেই খুদে পড়ুয়ারা ওই মহিলাকে ভূত ভেবেছিল। তাই ভয়ে কেঁদে ফেলেছে।
আরও পড়ুন: মেলায় ঘুরতে যাওয়াই কাল! গণধর্ষণের শিকার হয়ে বাড়ি ফিরল কিশোরী, বর্ণনা শুনে শিউরে উঠেছে পুলিশ
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই স্কুলের মধ্যে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছিল এক খুদে পড়ুয়ার। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার কেওনঝড়ে। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার স্কুলের মধ্যে ভুলবশত আটকে পড়ে ওই খুদে পড়ুয়া। পরিবারের তরফে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে গিয়েছিল দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রী। কিন্তু বিকেল চারটে বেজে যাওয়ার পরেও সে আর বাড়ি ফেরেনি।
সরকারি স্কুলের এক কর্মী স্কুল, ক্লাসরুমের দরজা বন্ধ করে চলে যান। কিন্তু তিনি দেখেননি আট বছর বয়সি ছাত্রী তখনও একটি ক্লাসরুমে বসে আছে। তিনি না দেখেই ঘর বন্ধ করে চলে যান। বিকেলের পর থেকে পরিবারের সদস্যরা খুদে ছাত্রীর খোঁজ শুরু করেন। রাতভর তার খোঁজ করেন এলাকায়।
এদিকে কিছুক্ষণ পর ওই ছাত্রী খেয়াল করে, স্কুলের দরজা বন্ধ। বেরোনোর আর উপায় নেই। ভয়ে, আতঙ্কে ক্লাসরুমেই চিৎকার শুরু করেন। তবে কেউ তার চিৎকার শুনতে পাননি। বাড়ি যাওয়ার জন্য ছটফট করতে থাকে সে। এরপর ক্লাসরুমের জানলা দিয়েই বেরোনোর চেষ্টা করে। তখনই ক্লাসরুমের জানলার গরাদ দিয়ে কোনও মতে বেরিয়ে যাওয়ার প্রাণপণে চেষ্টা চালায়। তখনই ঘটে বিপত্তি। ওই জানলার গরাদে আটকে যায় ছাত্রীর মাথা।
জানা গেছে, ছাত্রীর নাম জোৎস্না দেহুরি। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ওই জানলার গরাদে আটকে ছিল খুদে ছাত্রীর মাথা। জানা গেছে, কেওনঝড় জেলার বনস্পাল ব্লকের সরকারি উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। শুক্রবার সকালে স্কুলের রাঁধুনি দরজা খুলে ভিতরে ঢোকেন। তিনিই প্রথম খুদে ছাত্রীকে ওই অবস্থায় দেখতে পান।
তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় গ্রামবাসীদের ও ছাত্রীর পরিবারকে। দ্রুত তাঁরা স্কুলে পৌঁছন। গরাদটি আরও খানিকটা ফাঁকা করে ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। দ্রুত ছাত্রীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের তরফে জানা গেছে, ছাত্রীর শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। তবে এখনও সে আতঙ্কিত। অন্যদিকে এই ঘটনাটি ঘিরে জেলায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে। জেলা শিক্ষা আধিকারিক বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। এরপর ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌরহরি মাহান্তকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
