আজকাল ওয়েবডেস্ক: সৌরভ-মুসকান, সোনম-রাজ-এর পর প্রায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। স্বামীকে খুন করে, দিনের পর দিন মিথ্যে বলে চলা সকলকে। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে স্বীকার করা। মীরাট, মেঘালয়ের পর অসম। 

কী ঘটেছে? সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, অসমের গুয়াহাটি থেকে ৩৮ বছর বয়সের এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযোগ, স্বামীকে খুন করে, নিজের বাড়ির সামনেই পুঁতে দিয়েছিলেন ওই মহিলা। ওই মহিলার নাম রহিমা খাতুন। অভিযোগ, স্বামী বছর ৩৮-এর সাবিয়াল রেহমানকে খুন করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন: মেঘের বীজ বপন করবে দিল্লি! জানেন কী এই ‘ক্লাউড সিডিং’ প্রক্রিয়া? কেনই বা করা হয়?...

সূত্রের খবর, রহিমা স্বামীকে খুন করেছেন ২৬ জুন। গুয়াহাটির পান্ডু এলাকার জয়মাতি নগর এলাকায় ওই মহিলা তাঁর স্ক্র্যাপ ডিলার স্বামীকে খুন করেন। তার পরে বাড়ির সামনেই পাঁচ ফুটের একটি গর্ত খোড়েন এবং সেখানে মাটি চাপা দিয়ে দেন সাবিয়ালকে। এই চরম পদক্ষেপ গ্রহনের পিছনের বিস্তারিত কারণ এখনও জানা না গেলেও, জানা গিয়েছে, দম্পতির মধ্যে কলহ চলছিল। বিবাহিত সম্পর্কে সমস্যার জেরেই এই পদক্ষেপ বলে প্রাথমিক অনুমাম। যদিও রহিমা এবং সাবিয়ালের বিয়ে হয় বছর পনেরো আগে। সম্পতির দুই সন্তান রয়েছে।

সাবিয়াল রেহমানকে দিনকয়েক এলাকায় দেখতে না পাওয়ায় প্রশ্ন করেন স্থানীয়রা। সকলকে উত্তরে তাঁর স্ত্রী জানান, সাবিয়াল কেরলে গিয়েছেন কাজের জন্য। শেষের দিকে রহিমার উত্তর বেশ সন্দেহজনক লাগতে শুরু করে স্থানীয়দের। ঠিক সেই সময়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ বলে হাসপাতালে ভর্তি হতে যাচ্ছে জানান। এবং মিথ্যে গল্প দিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যান। 


তবে বেশিদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারেননি রহিমা। ১২ জুলাই সাবিয়ালের ভাই, দাদার নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ঠিক তার পরের দিন, ১৩ জুলাই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন রহিমা। ঘটনা প্রসঙ্গে গুয়াহাটি পশ্চিমের ডেপুটি কমিশনার জানান, ‘পুলিশ স্টেশনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, তিনি স্বীকার করেছেন যে, ২৬ জুন রাতে তাঁদের মধ্যে প্রবল বাক-বিতণ্ডা হয়। ঝগড়ার পর তিনি তাঁর স্বামীকে হত্যা করেন। তিনি জানিয়েছেন, বিবাদের সময় দু’ জনেই একে অপরের উপর আক্রমণ করেছিলেন, ঘটনার সময় স্বামী মদ্যপ ছিলেন বলেও জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন স্ত্রী।‘ স্ত্রীর আগাহতে স্বামীর মৃত্যুর পরেই কী করবেন বুঝতে না পেরে বাড়ির সামনে গর্ত খুঁড়ে সেখানে স্বামীকে মাটিচাপা দিয়ে দেন স্ত্রী। রহিমা খাতুনের স্বীকারোক্তির পর, পুলিশ রেহমানের মৃতদেহ উদ্ধার করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, উত্তর খুঁজতে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।

 

এর আগে প্রায় একই এক ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল দেশ। মার্চ মাসে, মুসকান তার স্ত্রী সৌরভকে খুন করে ড্রামে ভরে দিয়েছিল। ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশ জানা গিয়েছল, ২০১৬ সালে সৌরভ ও মুসকান বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রেমের সম্পর্ক পরিণতি পাওয়ায় খুব খুশি ছিলেন দু'জনে। স্ত্রীর সঙ্গে আরও সময় কাটানোর জন্য মার্চেন্ট নেভির চাকরি ছেড়ে বাড়িতে চলে আসেন। কিন্তু পারিবারিক অশান্তির কারণে এরপর বাড়ি ছেড়ে  মুসকানকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন সৌরভ। ২০১৯ সালে ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন মুসকান। কিন্তু সেই সুখের মুহূর্ত বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দিন কয়েক পরেই সৌরভ জানতে পারেন, তাঁর বন্ধু সাহিলের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত মুসকান। সেই সম্পর্ক ঘিরে অশান্তি চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। ডিভোর্সের পথে এগিয়েও, সন্তানের কথা ভেবে পিছিয়ে আসেন সৌরভ। ফের নেভির চাকরি নিয়ে ২০২৩ সালে ভিন দেশে চলে যান। মেয়ের ছ'বছরের জন্মদিন উপলক্ষে ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরেন সৌরভ। এর পরেই তাঁকে খুন করেন মুসকান এবং সাহিল।