আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাজা ঘোষণার পর থেকেই, নজরে ছিল, সে দেশের বিদেশমন্ত্রকের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

সোমবার বিকেলে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রক ভারত থেকে শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামানের ‘হস্তান্তর’-এর আবেদন জানিয়েছে। আর তারপরেই সরকারিভাবে বিবৃতি জারি করা হল ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে।

এদিন নিজেদের এক্স হ্যান্ডেলে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে একটি পোস্ট করে জানানো হয়, ‘ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থ বিশেষ করে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি ও স্থিতিশীলতার বিষয় নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই লক্ষ্য পূরণে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করব’।

উল্লেখ্য, এর আগে ইউনূস সরকারের তরফে দাবি করা হয়, যত দ্রুত সম্ভব দিল্লির তরফে যেন শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়। ২০২৪ সালে ছাত্র আন্দোলনের সময় সরকার পতনের পর থেকেই হাসিনা ভারতে আত্মগোপনে রয়েছেন।

এদিন সেই মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয় ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’ দোষী সাব্যস্ত করে। তারপরেই বাংলাদেশ সরকারের তরফে এক বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আজকের রায়ে পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল জুলাই হত্যাকান্ডের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং দন্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনও দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার সামিল।’

অন্যদিকে, মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণার পর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন হাসিনা। অভিযোগ করেন, এই রায় এসেছে ‘একটি অনির্বাচিত সরকারের প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত রিগড ট্রাইব্যুনাল’ থেকে।

যার মূল লক্ষ্য তাঁর দল আওয়ামী লিগকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দুর্বল করে দেওয়া। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০২৪ সালে ছাত্র আন্দোলনের সময়ে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পরপরই প্রকাশিত বিবৃতিতে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মহম্মদ ইউনুসের বিশৃঙ্খল, সহিংস, সামাজিক ভাবে পিছিয়ে দেওয়া প্রশাসন কোটি কোটি বাংলাদেশিকে কোনওভাবেই বোকা বানাতে পারবে না। তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার এই প্রচেষ্টা তারা বুঝে গেছে।’

হাসিনা আরও বলেন, 'যে তথাকথিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বিচার পরিচালনা করেছে, তার কখনওই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্য ছিল না। এমনকী, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো সম্পর্কে প্রকৃত সত্য উদঘাটনেরও কোনও চেষ্টা করেনি ট্রাইব্যুনাল।’

বঙ্গবন্ধুর মেয়ের ফাঁসি, বাংলাদেশেই মানবতাবিরোধী অপরাধে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলা দায়ের হয়েছিল। সোমবার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করল। এই রায় ছিল মোট  ৪৫৩ পাতার। রায়ের মোট ছ'টি অংশ ছিল। ট্রাইব্যুনালের প্রধান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার রায়ের শেষ অংশ পড়ে শোনান।