আজকাল ওয়েবডেস্ক: নিত্যদিন ভরা রাস্তায় উত্যক্ত। কটুক্তি থেকে অশালীন অঙ্গভঙ্গি, কিছুই বাদ থাকত না। অবশেষে বদলা নিল একদল ছাত্রী। সেই ভরা রাস্তাতেই তরুণকে চড়, থাপ্পড়, ঘুষি মেরে বদলা নিলেন তাঁরা। সেই সঙ্গে চলল চটি-পেটাও।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মাহোবাতে। পুলিশ জানিয়েছে, কোচিং ক্লাসে যাওয়ার পরেই হেনস্থার শিকার হন একদল ছাত্রী। তাঁদের দেখেই অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে এক যুবক। কয়েকজনের উদ্দেশে কটুক্তি করতেও শোনা যায়। এরপরই কড়া পদক্ষেপ করলেন ওই ছাত্রীরা। ভরা রাস্তায় ওই যুবকটে চড়, থাপ্পড় মেরে উচিত শিক্ষা দিলেন তাঁরা।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যার শুরুতেই দেখা গেছে, ওই যুবক লজ্জায় দু'হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখে। তাকেই ভরা রাস্তায় অপমান করতে দেখা গেছে তরুণীদের। এরপর ধাক্কা দিয়ে যুবককে মাটিতে ফেলে মারধর করতে শুরু করে। মাথায় চটি দিয়ে মারতেও দেখা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ দিন ধরেই ওই তরুণ ছাত্রীদের উত্যক্ত করছিল। কখনও অশালীন আচরণ, মন্তব্য, কখনও বা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি। দু'সপ্তাহ ধরে তরুণের এই আচরণ দেখেও এড়িয়ে যান ছাত্রীরা। অবশেষে কোচিং ক্লাসে যাওয়ার পথেই উচিত শিক্ষা দেন। ঘটনাটি ঘিরে তদন্ত করছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত আগস্ট মাসে ঠিক এমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল গুরুগ্রামে। পেশায় মডেল ওই তরুণী সোশ্যাল মিডিয়ায় ভয়াবহ ঘটনাটির বিবরণ দিয়েছেন। তাঁর কথায়, তিনি জয়পুর থেকে গুরুগ্রামে এসেছিলেন। গত ২ আগস্ট বেলা ১১টা নাগাদ রাজীব চক এলাকায় একটি ট্যাক্সির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সেই সময় এক যুবক তাঁর থেকে খানিকটা দূরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন।
তরুণীর অভিযোগ, বাসস্ট্যান্ডে আরও অনেকেই দাঁড়িয়ে ছিলেন সেই সময়। কিন্তু ওই যুবক একটানা তাঁর দিকে তাকিয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর তরুণীর কাছে এগিয়ে আসেন। এরপর ব্যাগটি বুকের সামনে রেখে, প্যান্টের চেন খুলে দেন। তরুণীকে দেখে ভরা রাস্তায় বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে হস্তমৈথুন করতে শুরু করে দেন তিনি।
তরুণী লিখেছেন, 'বাসস্ট্যান্ডের সামনে দাঁড়িয়ে যখন ট্যাক্সির জন্য অপেক্ষা করছিলাম, সেই সময়েই ওই যুবক আমার কাছে সরে আসেন। একনাগাড়ে আমার শরীরের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। এরপর আমার দিকে তাকিয়ে প্যান্টের চেন খুলে, ব্যাগের আড়াল থেকে হস্তমৈথুন করতে শুরু করেন।' ভিডিওবার্তায় তরুণী আরও জানিয়েছেন, ঘটনার জেরে হকচকিয়ে যান তিনি। হতভম্ব হয়ে চিৎকার করতে পারেননি। সেদিন আশেপাশের কাউকেই জানতে দেননি। কিন্তু পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরেও, যথাযথ পদক্ষেপ তড়িঘড়ি করে করেনি তারা।
তরুণীর আরও বক্তব্য, 'অনেকেই বলেছেন, আমার চিৎকার করে লোক জড়ো করা উচিত ছিল। চড় মারা উচিত ছিল। কিন্তু কেউই বুঝতে পারছেন না, এই ধরনের ঘটনার সময় একজন মেয়ের মনে কতটা ঝড় বয়ে যায়।' ঘটনাটির পরেই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু পুলিশ অনলাইনে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে।
তরুণী আরও জানিয়েছেন, 'আমি ঘরে পৌঁছেই তড়িঘড়ি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনাটি লিখে জানাই। সেই পোস্টে পুলিশ, রাজ্য সরকার, এবং মহিলা সুরক্ষা কমিটিকেও ট্যাগ করেছিলাম। কিন্তু কেউ কোনও সাড়া দেননি। পুলিশের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, থানায় এসে এফ আই আর দায়ের করতে হবে। অনলাইনে অভিযোগ শুনবে না তারা।'
পেশায় মডেল ওই তরুণী সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ জনপ্রিয়। ইনস্টাগ্রামে ৩৮ হাজার ফলোয়ার রয়েছে তাঁর। ভিডিওটি বার্তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যুবকের পরিচয়, নাম জেনে দ্রুত কড়া পদক্ষেপ করা হবে। তাঁর খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। দ্রুত তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে।
