আজকাল ওয়েবডেস্ক: ধুমধাম বিয়ের আয়োজন। জাঁকজমকপূর্ণ সাজসজ্জা। তবে নজর কাড়ল একদল নিমন্ত্রিত। বিয়ের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত হয়েই হাজির হলেন একদল ভিখারি, দুঃস্থ মানুষ। দেদার খাওয়াদাওয়ার আয়োজন ছিল তাঁদের জন্য। যে ঘটনার ভিডিও ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। জানা গেছে, নিজের বোনের বিয়েতে একদল ভিখারি, দরিদ্রকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন এক যুবক। গাজিপুরের বাসিন্দা সিদ্ধার্থ রাই। তাঁর বোনের বিয়েতে নিমন্ত্রিতদের তালিকায় শুধুমাত্র আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবরা ছিলেন না। সেই বিয়ের অনুষ্ঠানে জেলার ঘরহারা, দুঃস্থ, ভিখারিদের বিশেষ অতিথি হিসেবে নিমন্ত্রণ করেছিলেন সিদ্ধার্থ। 

সেই বিশেষ অতিথিদের বিয়ের অনুষ্ঠানে নিয়ে আসার জন্য গাড়ি পাঠিয়েছিলেন সিদ্ধার্থ। বিয়ের অনুষ্ঠানে আয়োজকদের আপ্যায়নে চোখে জল চলে আসে নিমন্ত্রিতদের। দেদার খাবারের আয়োজন তো ছিলই, পাশাপাশি তাঁদের জন্য উপহারের ব্যবস্থা করেছিলেন সিদ্ধার্থ। সকল নিমন্ত্রিতদের ব্যক্তিগতভাবে উপহার দেন তিনি। 

?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E2002978400357777770%7Ctwgr%5Eae73b4f52bbc16cd7a450333eece98f30f225cff%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Fm.dailyhunt.in%2Fnews%2Findia%2Fenglish%2Fnews18-epaper-dh523feb6a21f54358acc1d5d04a629da5%2Fupmaninvitesbeggarstosistersweddingservesfoodgivesthoughtfulreturngiftsinkakoinahitohmainay-newsid-n694145011

দিনের পর দিন রাস্তাতেই কাটে তাঁদের। দু'বেলা দু'মুঠো খাবার জোটে না। শীতের রাতে ঠকঠক করে কাঁপতে থাকেন। কোনও জমকালো বিয়ের অনুষ্ঠানে এভাবে যে আপ্যায়ন করা হবে, তা কল্পনাতীত তাঁদের কাছে। বিয়েতে উপস্থিত হয়ে, আয়োজন দেখে, আপ্যায়ন দেখে আনন্দে কেঁদে ফেলেন তাঁরা। 

চলতি মাসেই বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে আরেকটি নির্মম ঘটনা ঘটেছিল। দিন কয়েক আগেই দলিতের হাতে তৈরি খাবার খেয়েছিলেন মন্ত্রী। কিন্তু সাধারণ মানুষ সেই দলিতের হাতে তৈরি খাবার খেতেই হিতে বিপরীত ঘটল। দলিত পরিবারে খাওয়াদাওয়ার জন্য বয়কট করা হল এক আরএসএস কর্মী ও তাঁর পরিবারকে। ঘটনাটি ঘটেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের রাইসেন জেলার এক গ্রামে। ভরত রাজ ধকড় নামের এক আরএসএস কর্মী জানিয়েছেন, তিনি ও তাঁর পরিবারকে সামাজিকভাবে বয়কট করেছে গোটা গ্রাম। কারণ? এক দলিত পরিবারের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছিলেন তিনি এবং আরও দুই আত্মীয়। 

ওই দলিত পরিবারে বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানেই গিয়েছিলেন ভরত ও তাঁর আত্মীয়রা। সেখানে খাবার খাওয়ার পরেই তাঁদের বয়কট করার ঘোষণা করেন গ্রামবাসীরা। ভরত জানিয়েছেন, পিপারিয়া পাউরিয়া গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ পারোলের বাড়িতে গিয়ে খাওয়াদাওয়া করেছিলেন তাঁরা। 

ভরত, মনোজ প্যাটেল, এবং পেশায় শিক্ষক সত্যেন্দ্র রঘুবংশী সন্তোষের বাড়িতে গিয়ে খাবার খান। সেই খাওয়াদাওয়ার ভিডিওটি রেকর্ড করেছিলেন সত্যেন্দ্র। যা পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি নজরে পড়তেই তুমুল সরব হন কয়েকজন গ্রামবাসী। 

ভরত জানিয়েছেন, এই ঘটনার পরেই পঞ্চায়েতে‌ বৈঠক বসে। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান সহ প্রভাবশালী কয়েকজন গ্রামবাসী। সেখানেই ভরতদের উদ্দেশে বলা হয়, 'দলিত পরিবারের খাবার ছুঁয়ে দেখাও পাপ।' বৈঠকে অনেকেই প্রস্তাব দেন, তিনজনের শুদ্ধিকরণের প্রয়োজন আছে। তিনজনকেই গঙ্গাস্নান করার নির্দেশ দেওয়া হয়। 

পঞ্চায়েতে চাপের মুখে সত্যেন্দ্র ও মনোজ নির্দেশ মেনে গঙ্গাস্নান করেন। কিন্তু ভরত তাতে রাজি হননি। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এই নির্দেশ পুরোপুরি অসাংবিধানিক। এরপরই ভরত ও তাঁর পরিবারকে বয়কট করা হয়। গ্রামের কোনও অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ জানানো হয় না তাঁদের। কেউ তাঁদের সঙ্গে কথাও বলেন না। যা ঘিরে চূড়ান্ত অপমানের শিকার হচ্ছেন দিনের পর দিন। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরাহা মেলেনি। 

রাজ্যের মন্ত্রী নরেন্দ্র শিবাজী প্যাটেলের বিধানসভা এলাকা উদয়পুরাতেই এই ঘটনাটি ঘটেছে। দিন কয়েক আগেই এই মন্ত্রী এক দলিত পরিবারে গিয়ে খাওয়াদাওয়া করেছিলেন। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বার্তা দিতেই দলিতের হাতে তৈরি খাবার খেয়েছিলেন তিনি। এরপরেও কোনও হেলদোল নেই গ্রামবাসীদের। ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর অরুণ কুমার বিশ্বকর্মা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত কড়া পদক্ষেপ করা হবে।