আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় বিদেশনীতির প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে স্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছিলেন কূটনীতিক এবং ইন্দিরা গান্ধীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি এন হাসকর। ১৯৪৭ সালে বার্লিন সম্মেলনে তুলে ধরেন তিনটি মূল পয়েন্ট।
একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে এক বিশিষ্ট ভারতীয় বক্তা বিদেশনীতির মৌলিক ভিত্তি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। তাঁর মতে, কোনো দেশের বিদেশনীতি নিয়ে আলোচনার পূর্বশর্ত হলো সেই দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা। তিনি বলেন, যদিও ইউরোপে জাতীয়তাবাদ ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিতর্ক আছে, তবে উন্নয়নশীল দেশের জন্য এটাই একমাত্র রক্ষাকবচ।
বক্তা সতর্ক করেন, বহুজাতিক কোম্পানির আধিপত্যকে আড়াল করতে কিছু পণ্ডিত সার্বভৌমত্বের অবসান চাচ্ছেন, যা বাস্তবতায় বিপজ্জনক। তিনি ব্যঙ্গ করে বলেন, যদি ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রিটেন সার্বভৌমত্ব ছাড়ে, ভারতও ছাড়তে রাজি। তিনি আরও বলেন, বিদেশনীতির সাফল্য শুধু অস্ত্র বা সামরিক শক্তিতে নয়, সমাজের ঐক্য ও ঐতিহ্যের উপর নির্ভর করে। ইতিহাস, সংস্কৃতি ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো বিদেশনীতি টিকবে না।
তৃতীয়ত, তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে কেবল শক্তির ভারসাম্য নয়, বরং পরমাণু যুগে যুদ্ধের সীমাবদ্ধতা ও সর্বনাশা পরিণতির কথা বিবেচনা করে বিদেশনীতি গড়তে হবে। তাঁর মতে, নেহরুর নীতিই বাস্তবতাকে গভীরভাবে অনুধাবন করেছিল। এই বক্তৃতা বিদেশনীতি নিয়ে এক গভীর বাস্তবতামূলক দৃষ্টিভঙ্গি হাজির করে, যেখানে আদর্শ ও জাতীয় স্বার্থের মধ্যে ভারসাম্য রাখার কথা বলা হয় এমন এক পরিস্থিতিতে যেখানে বর্তমানে দেশের সার্বভৌমত্ব, বিদেশনীতি বিদেশি শক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা।
