আজকাল ওয়েবডেস্ক:  নির্বাচনী কমিশন ইতিমধ্যে জানিয়েছে যে, ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটা নিয়ে কোনও রাজনৈতিক দল তাদের কাছে অভিযোগ করেনি। তবে রাজ্যের বিভিন্ন বুথ লেভেলের এজেন্টরা বলছেন, তারা কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে, কিন্তু সেই অভিযোগের প্রতিক্রিয়া ভিন্ন মাত্রার হয়েছে। আগস্ট ১ তারিখে ‘স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন (SIR)’ এর পরে প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা থেকে প্রায় ৬৫ লাখ ভোটারের নাম বাদ পড়েছে। কমিশন বলেছে, এদের মধ্যে অনেকে মৃত, কেউ কেউ স্থায়ীভাবে অন্যত্র চলে গেছেন এবং তালিকায় ডাবল নাম থাকার মতো নানা কারণে নাম কাটা হয়েছে।

আলোর মুখ দেখালো আরাহ বিধানসভা এলাকায় সিপিআই(এম-এল) লিবারেশনের বুথ এজেন্ট চন্দন কুমার। তিনি জানান, সেখানে ১৭৪ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। তবে কমিশন থেকে তাদের নাম কাটা হওয়ার কোনো কারণ জানানো হয়নি। চন্দন কুমার বলেন, “কমিশন যা বলেছিল তা হলো, নাম বাদ হওয়ার কারণ জানানো হবে। কিন্তু তারা এখনো কোনো কারণ জানাননি। কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় নির্বাচনী কর্মকর্তারা বলেছেন, ওই ভোটারদের খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা আসলে এখনও সেই এলাকায় রয়েছেন।”

আরও পড়ুন: ভারতে পারমাণবিক হামলার হুমকি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের! সতর্ক কেন্দ্র 

পার্টি ৮ আগস্ট কমিশনকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিল যাতে ভোটারদের নাম পুনরায় যুক্ত করার পাশাপাশি নাম কাটা নিয়ে তদন্তের দাবি ছিল। তবে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন কুমার। তিনি আরও বলেন, “একজন অবজার্ভারকে আমরা দেখা করেছি, তিনি বলেছেন বিষয়টি তদন্ত করবেন, কিন্তু আমরা এখনো কোন কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। যাদের নাম কাটা হয়েছে, বেশিরভাগই অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষ।”

নির্বাচনী কমিশন বাদ পড়া ভোটারদের নামের তালিকা প্রকাশ না করায় কুমার অভিযোগ করেছেন, নাম কাটা হওয়ার কারণ বোঝা কঠিন হয়ে পড়েছে। দারভাঙ্গার বাঢ়পুর বিধানসভা এলাকায়ও কমপক্ষে ২০ জন ভোটারের নাম বাদ পড়েছে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে। তবে সেখানে কমিশনের পদক্ষেপ ছিল দ্রুত ও কার্যকর। সিপিআই(এম-এল) লিবারেশনের বুথ এজেন্ট অমিত পাসওয়ান অভিযোগ জানানোর পর জেলা প্রশাসক, ব্লক উন্নয়ন কর্মকর্তা ও অন্যান্য সরকারি আধিকারিক গ্রামে গিয়ে দীর্ঘ সময় তদন্ত করেন।

তদন্তে দেখা গেছে, বুথ লেভেল অফিসার (BLO) ভোটারদের এনুমারেশন ফর্ম সংগ্রহ করেননি। যদিও ওই অফিসার দাবি করেছেন যে ফর্ম বিতরণ করেছেন, কিন্তু ভোটাররা জমা দেননি। কিন্তু ভোটাররা জানাচ্ছেন, তারা ফর্ম পাওয়ার বিষয়ে অবহিতও ছিলেন না, বেশিরভাগই অশিক্ষিত। নির্বাচনী অফিসারের এই অবহেলায় বুথ লেভেল অফিসারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। অমিত পাসওয়ান আরও জানিয়েছেন, বাঢ়পুরের পার্শ্ববর্তী বুথ থেকেও কিছু ভোটারের নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। তারা সব বুথের ব্যাপারে তদন্ত চালিয়ে যথাযথ প্রমাণসহ অভিযোগ জানাবে।

সারান জেলার রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা সুরেন্দ্র রামও প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, মৃত ভোটারদের নাম তালিকায় রয়েছে অথচ প্রকৃত ভোটারদের নাম বাদ পড়েছে। এই ভোটার তালিকা থেকে নাম কাটা নিয়ে অভিযোগ ওঠার পেছনে মূলত ভোটারদের অবহেলা ও প্রশাসনিক অনিয়মই দায়ী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কর্মীরা। তাদের দাবি, নির্বাচনকে ন্যায্য ও স্বচ্ছ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত ও যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।