আজকাল ওয়েবডেস্ক: গুরগাঁওয়ের সুশান্ত লোক ফেজ-২। বৃস্পতিবারে সেখানে যা ঘটে গিয়েছে, তা নিয়েই উত্তাল গোটা রাজ্য। রেশ ছড়িয়েছে দেশেও। সেখানেই, নিজের মেয়ে, রাধিকা, যে একজন প্রতিভাবান টেনিস খেলোয়াড়, তাঁকে খুন করেছেন বাবা। গুলি করে, খুন, নিজের মেয়েকেই। স্বাভাবিকভাবেই কোন পরিস্থিতিতে একজন বাবা তাঁর মেয়েকে খুন করেছেন? তা নিয়ে জল্পনা। গত কয়েকঘণ্টায় উঠে এসেছে একাধিক তথ্যও। একাধিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে প্রতিবেশীদের নানা কটাক্ষ শুনে এই চরম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন রাধিকার বাবা। কোথাও উল্লিখিত, রাধিকার আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েই বেছে নিয়েছেন এই সিদ্ধান্ত। এসবের মাঝেই সামনে এসেছে রাধিকার কাকার মন্তব্য। কী বলছেন তিনি?

আরও পড়ুন: রাজ্যস্তরে খেলে টেনিসে তারকা হয়ে উঠছিলেন ধীরে ধীরে, সেই মেয়েকই গুলি করে খুন করলেন বাবা, কী এমন ঘটল? 

সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাধিকার মৃত্যু প্রসঙ্গে এবার মুখ খুলেছেন তাঁর কাকা। জানিয়েছেন, আচমকা তিনি বিকট গুলির শব্দ শোনেন। রাধিকার মৃত্যু যে বাড়িতে ঘটেছে, ওই বাড়িতে নীচের তলায় থাকতেন তাঁর কাকা কুলদ্বীপ যাদব এবং তাঁর পরিবার। পুলিশি জেরায় তিনি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ তিনি আচমকা উপরের তলায় বিকট গুলির শব্দ শুনতে পান। শুনেই আর কাল বিলম্ব না করে দৌড়ে যান উপরের  তলায় যেখানে রাধিকারা থাকতেন। গিয়েই তিনি বীভৎস দৃশ্য দেখেন। দেখেন, রক্তের মধ্যে পড়ে রয়েছেন তাঁর আদরের ভাইঝি। ততক্ষণে সব শেষ। রাধিকার দেহ তিনি রান্নাঘরে পঈড়ে থাকতে দেখেন বলে জানিয়েছেন। একই সঙ্গে জানিয়েছেন সেই মুহূর্তে তিনি দেখেন, তাঁর রিভলভারটি অর্থাৎ বন্দুকটি পড়ে ছিল ড্রয়িংরুমে। 

কুলদ্বীপের ছেলে পীয়ুসও গুলির শব্দ পেয়েই দোতলায় ছুটে যান। কুলদ্বীপ এবং পীয়ুস মিলেই রাধিকাকে তৎক্ষণাৎ উদ্ধার করে নিয়ে যান নিকটবর্তী হাসপাতালে। পুলিশি জেরায় এসব জানিয়েছেন রাধিকার কাকাই। জানান, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর, চিকিৎসকরা রাধিকাকে মৃত ঘোষণা করেন। কুলদ্বীপ জানিয়েছেন, তাঁর দাদা দীপক, অর্থাৎ রাধিকার বাবার ৩২ বোরের রিভলবারের লাইসেন্স রয়েছে। দীপকই যে গুলি চালিয়েছেন, সেকথাও জানিয়েছেন তিনি। দীপকের এক ছেলেও আছেন, ধীরজ। তবে ঘটনার সময় ধীরজ বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না, ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। 

পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জেরায় দীপক স্বীকার করেছেন মেয়েকে খুন করেছেন তিনি। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, মেয়ে রাধিকার টেনিস অ্যাকাডেমি খুব ভাল চলছিল। তাতেই নানা কটাক্ষ করতে থাকেন পড়শিরা। অনেকেই বলেন, মেয়ের টাকা ভোগ করছেন বাবা। জিজ্ঞাসাবাদের সময় দীপক জানান, কাঁধে আঘাত পাওয়ার পর তার মেয়ে একটি অ্যাকাডেমি খোলেন। কিন্তু দীপক গ্রামের অর্থাৎ ওয়াজিরাবাদের লোকজন তাঁকে নানাভাবে উপহাস করতেন বলে জানিয়েছেন। তিনি মেয়েকে অ্যাকাডেমি বন্ধ করে দিতেও বলেছিলেন। কিন্তু মেয়ে তাতে রাজি হননি কোনওভাবেই। তাঁর দাবি, উপহাস, কটাক্ষে জেরবার হয়েই বেছে নিয়েছেন চরম পদক্ষেপ। 

যদিও, রাধিকার মৃত্যুর পর প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল টেনিস খেলার পাশাপাশি ইনস্টাগ্রামে রিল বানানোর প্রতি আসক্তি ছিল তাঁর। এদিনও সেই কারণেই রাধিকার সঙ্গে বচসা লাগে তাঁর বাবার।ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তার করে। এমনকি, খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়। ঘটনার কয়েকঘণ্টায় ফের উঠে এল অন্য তথ্য।