আজকাল ওয়েবডেস্ক: নেশা নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো (এনসিবি) এবং দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল যৌথ অভিযানে রাজধানী দিল্লিতে এক বিশাল মাদকচক্রকে ধরাশায়ী করেছে। রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, দিল্লির ছাতারপুরের একটি বাড়ি থেকে ৩২৮ কেজি উচ্চমানের মেথামফেটামিন উদ্ধার করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২৬২ কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধারের ঘটনা রাজধানীতে অন্যতম বৃহত্তম বলে দাবি করেছে সরকার।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতি অনুযায়ী, অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন ক্রিস্টাল ফোর্ট্রেস’। এটি ছিল একটি সমন্বিত গোয়েন্দা-শক্তিনির্ভর অভিযান, যা বৃহৎ আকারের আন্তর্জাতিক সিন্থেটিক মাদক কারবার চক্রকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়। অভিযানে দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে একজন নাগাল্যান্ডের এক মহিলা। গত ২০ নভেম্বর তাকে ছাতারপুরের তার বাড়ি থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়। নাগাল্যান্ড পুলিশের সহায়তায় এই গ্রেপ্তার সম্পন্ন হয়।
বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া মেথামফেটামিন ছিল অত্যন্ত উচ্চমানের এবং এটি রাজধানীর মধ্যে এত বড় পরিমাণ মাদক উদ্ধার হওয়ার অন্যতম ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এনসিবি জানিয়েছে যে মাদকগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে পাচারের উদ্দেশ্যে এখানে সংরক্ষণ করা হয়েছিল।
অভিযানের সফলতার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এনসিবি ও দিল্লি পুলিশের যৌথ দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “গত কয়েক মাস ধরে গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তিগত নজরদারির ভিত্তিতে যে নিরলস অনুসন্ধান চলছিল, তারই ফলাফল হলো এই বড় সাফল্য। একটি সুসংগঠিত মাদকপাচার চক্রকে ভেঙে দিতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, এই চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে মূল হোতা বিদেশে বসে পুরো নেটওয়ার্কটি পরিচালনা করছিল। তিনি গত বছর দিল্লিতে ৮২.৫ কেজি উচ্চমানের কোকেন উদ্ধার মামলারও অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত। তাকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে তার প্রত্যর্পণের চেষ্টা চলছে।
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে যে চক্রটি বহু পর্যায়ে বিভক্ত কুরিয়ার, নিরাপদ আশ্রয়স্থল এবং স্তরভিত্তিক হ্যান্ডলারদের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে কাজ চালাচ্ছিল। ভারতের বিভিন্ন এলাকায় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে মাদক সরবরাহের জন্য দিল্লিকে একটি বড় বিতরণকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
সরকার বলেছে, এই সফল অভিযানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাদকচক্রের একটি বড় শাখা ভেঙে দেওয়া গেলেও তদন্ত এখনো চলছে এবং আরও বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনের সন্ধান করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশ্বাস করে, এই অভিযান ভারতের মাদকবিরোধী লড়াইয়ে নতুন দিশা দেখাবে।
