আজকাল ওয়েবডেস্ক: কর্মসংস্থানের এ কী হাল? রাজস্থানে ৫৩,৭৪৯টি পিয়ন পদের জন্য ২৪.৭৬ লক্ষেরও বেশি আবেদন করেছেন। এর মধ্যে অনেকেই পিএইচডি, এমবিএ এবং আইনে ডিগ্রিধারী। রয়েছেন সিভিল সার্ভিসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন প্রার্থীরাও।
অর্থাৎ, একটি পিওন পদের জন্য ৪৬ জন আবেদনকারী রয়েছেন। প্রার্থীদের অনেকেই উচ্চ শিক্ষিত এবং একই সঙ্গে প্রশাসনিক পরিষেবা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জয়পুরের গোপালপুরা এলাকার চাকরির পরীক্ষার জন্য তৈরি কোচিং সেন্টারগুলিতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আবেদন করার কারণ জানিয়েছেন।
এমএ, বিএড এবং আইটি কোর্স সম্পন্ন কমল কিশোর জানিয়েছেন যে, তিনি ২০১৮ সাল থেকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সফল হননি। তাঁর কথায়, "সরকারি চাকরির পরীক্ষায় যদি আর কিছুতে সফল না হওয়া যায় তাহলে বেকার থাকার চেয়ে পিয়নের চাকরিই ভালো।"
বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী তনুজা যাদব এবং এমএ, বিএড করা সুমিত্রা চৌধুরীও একই রকম মতামত প্রকাশ করেছেন। দুজনেই রাজস্থান প্রশাসনিক পরিষেবা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু, একটি নিরাপদ সরকারি চাকরির সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ। সরকারি চাকরিতে যদি জল সরবরাহ করতে হয় তাতেও কোনও আপত্তি নেই তাঁদের।
পিওনের চাকরির জন্য এত পরিমাণে আবেদন আসবে তা আঁচ করা সম্ভব হয়নি রাজ্য প্রশাসনের। অনেক প্রার্থী ফর্ম জমা দেওয়ার সময় প্রযুক্তিগত সমস্যার সম্মুখীন হন। নজিরবিহীনভাবে আবেদনের সময়সীমার শেষ পাঁচ ঘন্টায় ১.১১ লক্ষ ফর্ম জমা দেওয়া হয়েছে (প্রায় প্রতি ছয় সেকেন্ডে একটি আবেদন)। ফলে ওয়েব সাইটটি ঘন ঘন ক্র্যাশ করে যাচ্ছিল। এতেই বিপদে পড়েছিলেন আবেদনকারীদের অনেকে।
রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বেসরকারি কর্মচারী কিরণের মতো কিছু আবেদনকারী নথি সংগ্রহে বিলম্বের কারণে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারেননি। তিনি এবং অন্যরা কমিশনকে আবেদনের সময়সীমা পুনরায় খোলার জন্য অনুরোধ করেছেন।
চাকরির উদ্বেগ এমন যে এর আগে, ২,৩৯৯টি বনরক্ষী পদের জন্য, ২২ লক্ষ প্রার্থী আবেদন করেছিলেন।
সরকারি তথ্য অনুসারে, রাজস্থানে প্রায় ১৮ লক্ষ নথিভুক্ত বেকার রয়েছেন। তবে, প্রকৃত সংখ্যা ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষের মধ্যে বলে অনুমান।
রাজস্থান স্টাফ সিলেকশন বোর্ডের সচিব ভাগ চাঁদ বাধাল বিপুল আবেদনের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, পিয়ন পদের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা ছিল দশম শ্রেণী, যা বিভিন্ন ধরণের আবেদনকারীদের আকর্ষণ করে। এখন চ্যালেঞ্জ হল পরীক্ষা পরিচালনা করা।
রাজস্থানে একসঙ্গে প্রায় ৩ লক্ষ প্রার্থীর জন্য পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে, যার অর্থ প্রক্রিয়াটি একাধিক শিফটে পরিচালনা করতে হবে। ফলে পরীক্ষার ফলাফল ও স্বচ্ছতা নিয়ে আশঙ্কা তৈরিব হয়েছে।
