আজকাল ওয়েবডেস্ক: মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিশেষ বৈঠক সারলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। গত ৪৮ ঘণ্টায় এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য মোদি ও ডোভালের বৈঠক হল। সীমান্তে যুদ্ধের আবহ। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো বুধবারই দেশজুড়ে নাগরিক প্রতিরক্ষা মহড়া চলবে। তার আগে মোদি-ডোভাল বৈঠক যুদ্ধের জল্পনায় নতুন ইন্ধন জোগাচ্ছে।

গত সপ্তাতেই মোদি-ডোভাল-চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকে ছিলেন দেশের বায়ু, নৌ ও সেনা বাহিনীর প্রধানরা। ওই বৈঠকেই শত্রুদের বিরুদ্ধে ভারতীয় কোথায়, কখন, কী ভাবে আঘাত হানবে ভারতীয় সেনা, তা নির্ধারনে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেন প্রধানমন্ত্রী। 

লস্কর সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের আলোচনা জোরদার করতে গত কয়েকদিন ধরেই প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, এনএসএ ডোভাল, প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান এবং সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী প্রধানদের সঙ্গে একাধিক উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক করেছেন।

২২ এপ্রিলের পহেলগাঁও হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর, পহেলগাঁওয়ের এই জঙ্গি আক্রমণই ছিল ভারতে সবচেয়ে ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলাষ। পুলওয়ামা হামলায় ৪০ জন সেনা নিহত হয়েছিলেন।

পহেলগাঁও হামলায় দায় স্বাকার করেছে পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর অনুমোদিত শাখা সংগঠন রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট।
দিল্লির দাবি, এই হামলার নেপথ্যেও পাকিস্তান জড়িত। 

তবে ইসলামাবাদ সরকার পহেলগাঁও হামলায় পাক যোগ অস্বীকার করেছে। এছাড়াও ভারতের দাবি নস্য়াৎ করতে স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করেছে।

দুনিয়ার একাধিক শক্তিধর রাষ্ট্রই সন্ত্রাসবাদী নির্মূলে ভারতে পাশে রয়েছে। ফলে কোণঠাসা পাকিস্তান। ইসলামাবাদ এই সপ্তাহে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে ভারতের 'বন্ধু' দেশগুলির থেকে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছে।

তবে, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ পাকিস্তানকে সরাসরি সমর্থন দিতে অনিচ্ছুক বলে মনে হচ্ছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, লস্কর-ই-তৈয়বার জড়িত থাকার বিষয়ে ইসলামাবাদকে কঠিন প্রশ্নের মুখে ফেলেছে নিরাপত্তা পরিষদ। পহেলগাঁওয়ে সাধারণ নাগরিক এবং পর্যটকদের লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়ে কাউন্সিল পাকিস্তানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে জানা গিয়েছে।

বৈঠকে পাকিস্তান "ভারত সহ আমাদের সকল প্রতিবেশীর সাথে শান্তিপূর্ণ, সহযোগিতামূলক সম্পর্কের প্রতি অঙ্গীকার" পুনর্ব্যক্ত করে এবং "পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সার্বভৌম সমতার" আহ্বান জানিয়েছে।

মুখে শান্তির কথা বললেও পাকিস্তান সেনা পহেলগাঁও হামলার পর থেকে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর টানা ১২ দিন ধরে অবিরাম এবং বিনা উস্কানিতে গুলিবর্ষণ করে চলছে। ভারতীয় বাহিনীও যথাযথ জবাব দিচ্ছে।