আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তর প্রদেশ বিভিন্ন ঘটনা কেন্দ্রিক বরাবর খবরের শিরোনামে। এবার রাজ্যের বরেলিতে এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সামনে এসেছে। বদায়ুঁ জেলার বারাউলি গ্রামের বাসিন্দা ওমসারন মৌর্যের বিরুদ্ধে নৃশংস খুনের অভিযোগ। সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের স্ত্রী'কে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছেন অভিযুক্ত। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ মাত্র ১৫ ঘণ্টার মধ্যেই ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওমসারন মৌর্য পেশায় একজন বিয়ের সাজসজ্জা কর্মী। কর্মসূত্রে তাঁর পরিচয় হয় মন্নত্ নামের এক যুবতীর সঙ্গে। তিনি আবার এক বিউটি পার্লারের মালিক। এই পরিচয় থেকেই তাঁদের ক্রমশ ঘনিষ্ঠতা বাড়ে৷ এমনকি পরে গোপনে বিবাহ বন্ধনেও আবদ্ধ হয়েছেন তাঁরা। সূত্রের খবর অনুযায়ী, তাঁর প্রথম স্ত্রী অমরাবতী ছিলেন ধর্মপ্রাণ ও পুরনো ধ্যান-ধারণার মানুষ। পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছেন ওমসারন। পুলিশকে তিনি বলেন, মন্নত্ ওমসারণকে দুই নারীর মধ্যে একজনকে বেছে নিতে বলেছিলেন। আর এই কারণেই স্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি।
সূত্রে জানা গিয়েছে ঘটনার দিন, বুধবার রাতে ওমসারন তাঁর স্ত্রী অমরাবতীর সঙ্গে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে তিনি নিজের স্ত্রীকে হত্যা করে বিষয়টি ডাকাতির ঘটনা বলে সাজানোর চেষ্টা করেন। রাত ১২:৩০ নাগাদ তিনি অমরাবতীর ভাই ভগবান দাস ও বন্ধু অনিল যাদবকে ফোন করে জানান, কিছু ডাকাত তাঁদের ওপর হামলা চালিয়ে অমরাবতীকে হত্যা করেছে। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে অমরাবতীর মৃতদেহ উদ্ধার করে। সেই সময় ওমসারনের গায়ে বেশ কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন লক্ষ্য করে পুলিশ৷ এমনকি তাঁর পোশাকও ছেঁড়া ছিল, যা তিনি ডাকাতদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ফল বলে দাবি করেন।
ঘটনার প্রেক্ষিতে ওমসারন নিজেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন যে, ৬-৭ জন অজ্ঞাত দুষ্কৃতি তাঁদের পথ আটকায়। এরপর তাঁদের থেকে লুটপাটের চেষ্টা করে। প্রতিরোধ করায় তাঁরা অমরাবতীকে খুন করে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তবে পুলিশের সন্দেহ হয়। কারণ হিসেবে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলের প্রায় ৫০ মিটার দূরে পাওয়া যায় অমরাবতীর গহনা ও কিছু নগদ টাকা। পুলিশ জানিয়েছে, ডাকাতি হলে সাধারণত সমস্ত সামগ্রী সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনার মূলে পৌঁছতে, পুলিশ ও ফরেনসিক দল ঘটনাস্থলে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে৷ পাশপাশি ওমসারনের মোবাইল কল রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দেখা যায়, হত্যার কয়েক মিনিট আগেই তিনি মন্নত্কে ফোন করেছিলেন। এমনকি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লোহার বস্তুটিও তিনি তাঁর শ্যালকের বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রমাণ উপস্থাপন করা হলে ওমসারন শেষমেশ নিজের স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তিনি আরও জানান, মন্নত্ সরাসরি ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থাকলেও তিনিই তাঁকে হত্যা করতে উস্কানি দিয়েছিলেন। এস.পি সাউথ (SP South) অংশিকা বর্মা জানান, ওমসারন ও মন্নতের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও দীর্ঘ ফোনালাপের বিষয়টি কল রেকর্ড থেকে স্পষ্ট। মন্নতের ভূমিকা তদন্ত করে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুনঃ ছাত্রের সঙ্গে 'নিষিদ্ধ' খেলা! জেল এড়াতে যা করলেন শিক্ষিকা, শুনলে চমকে উঠবেন আপনিও
খবর সূত্রে, বর্তমানে পুলিশ এই দ্রুত তদন্ত ও অপরাধ উদঘাটনের জন্য তদন্তকারী দলকে ২৫,০০০ টাকার পুরস্কার দিয়েছে। ওমসারনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হয়েছে। আপাতত মামলার পরবর্তী শুনানি প্রক্রিয়াধীন। দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে৷
