আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লিতে ফের ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড। উদ্ধার হল এক পরিবারের তিন সদস্যের রক্তাক্ত নিথর দেহ। গত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আবারও ব্যাপক শোরগোল ছড়াল এলাকায়। পুলিশের অনুমান, পরিবারের এক সদস্য নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লির ময়দানগারহি এলাকায়। পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, মৃতেরা হলেন, প্রেম সিং। তাঁর বয়স ৪৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। তাঁর স্ত্রী রজনী, বয়স ৪০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। আর দম্পতির বড় ছেলে হৃতিক, তাঁর বয়স ২৪ বছর। ঘটনার পর থেকে তাঁদের ছোট ছেলে সিদ্ধার্থ পালাতক। 

 

এদিন সকালেই পচা দুর্গন্ধ পেয়েই প্রতিবেশী এক জায়গায় জড়ো হন। ওই বাড়ি থেকেই পচা দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। তড়িঘড়ি করে সকলে পুলিশে খবর দেন। ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছয় স্থানীয় থানার পুলিশ। সেই বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে পুলিশ। ঘরে ঢুকেই রক্তস্রোতে পা পড়ে তাদের। 

 

আরও পড়ুন: ফেসবুকে আলাপ, ভালবাসার টানে ১০০ কিমি পাড়ি, বান্ধবীর বাড়ির উঠোনেই রক্তারক্তি কাণ্ড, ১৩ ঘণ্টা যুবককে পেটানো হল!

 

পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ির একতলায় প্রেম সিং ও হৃতিকের রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত দেহ দেখতে পায় তারা। ওই বাড়ির দোতলা থেকে রজনীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে তারা। রজনীর মুখে কাপড় বাঁধা ছিল। তিনটি দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। এই ঘটনার পরেই সিদ্ধার্থের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। 

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, সিদ্ধার্থের মানসিক সমস্যা ছিল। অতীতেও ভয়ঙ্কর কিছু ঘটনা সে ঘটিয়েছিল। অভিযোগের বিষয়ে ঘরদোর খতিয়ে দেখে পুলিশ। একাধিক ওষুধ ও প্রেসক্রিপশন উদ্ধার করে তারা। জানা গেছে, ওসিডিতে ভুগছিলেন সিদ্ধার্থ। ১২ বছর বয়স থেকে মানসিক অসুস্থতার জন্য ওষুধ খান তিনি। অন্যদিকে অভিযোগ, প্রেম সিং নিত্যদিন মদ্যপান করতেন। মত্ত অবস্থায় বাড়িতে প্রায়ই অশান্তি করতেন। 

 

একটি সূত্র মারফত পুলিশ জানতে পেরেছে, এক বন্ধুকে সিদ্ধার্থ খুনের ঘটনাটি জানিয়েছেন। এও জানিয়েছেন, বাবা, মা ও দাদাকে নির্মমভাবে খুনের পর পালিয়ে যাওয়ার পর বন্ধুকে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর তিনি আর কখনও ময়দানগারহিতে ফিরবেন না। বাড়িটি ইতিমধ্যেই সিল করে দিয়েছে পুলিশ। ফরেন্সিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে নমুনা সংগ্রহ করেছে। খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। 

 

প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহেই দিল্লির মেহরৌলিতে এক যুবতীকে নির্মমভাবে খুন করা হয়। এহেন খুনের ঘটনা সামনে আসতেই দেখা গিয়েছে, এটি নামকরা বলিউড সিনেমা অভিনেতা অজয় দেবগন অভিনীত 'দৃশ্যম' সিনেমার কাহিনির মতই ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত একটি হত্যাকাণ্ড। ঘটনার জেরে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ৪৭ বছর বয়সী শাদাব আলি তাঁর স্ত্রী ফাতিমাকে পরকীয়ার সন্দেহে হত্যা করেন। খুন করে বন্ধুদের সহযোগিতায় তাঁর দেহ মৃতদেহ কবরস্থানে গোপনে দাফন করেন। 

 

অভিযুক্ত শাদাব আলি উত্তরপ্রদেশের আমরোহার একজন পেশাদার চিত্রশিল্পী। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি কয়েকদিন ধরে তাঁর স্ত্রী ফাতিমাকে জোর করে কীটনাশক ও ঘুমের ওষুধ খাওয়ান। এতে ফাতিমা আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। অবশেষে ১ আগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়।

 

 পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রী'র মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর, শাদাব তাঁর দুই বন্ধু-শাহরুখ খান ও তানভীর- এর সহায়তায় স্ত্রী ফাতিমার মৃতদেহ একটি গাড়িতে করে মেহরৌলির এক কবরস্থানে নিয়ে যান। তারপর সেখানে রাতের অন্ধকারে দাফন করে দেন। ঘটনা গোপন রাখতে শাদাব অত্যন্ত কৌশলে ফাতিমার মোবাইল থেকে নিজের ফোনে একটি বার্তা পাঠান। তাতে লেখা ছিল, 'আমি পালিয়ে গিয়েছি। অন্য একজনকে বিয়ে করতে যাচ্ছি।' একইসঙ্গে তিনি ফাতিমার জামাকাপড় একটি খালে ফেলে দেন যাতে কোনও প্রমাণ না থাকে।