আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্ত্রীর আত্মীয়স্বজন এবং দুই পুলিশ কনস্টেবলের কর্মকাণ্ডে হতাশ এবং ক্ষুব্ধ হয়ে নিজেকে শেষ করে দিলেন উত্তরপ্রদেশের এক ব্যক্তি। চরম পদক্ষেপের আগে একটি সুইসাইড নোট লিখে রেখে যান তিনি, তাও একটি অস্বাভাবিক জায়গায়। সাদা প্যান্টে নীল কালি দিয়ে লেখা নোটে তাঁর অভিযোগ, ওই দুই কনস্টেবল তাঁকে মারধর করেছিলেন এবং টাকা দাবি করেছিলেন।
সোমবার, ফারুখাবাদের ছেড়া নাগলা এলাকার এক মহিলা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন যে তাঁর স্বামী দিলীপ রাজপুত মদ্যপ অবস্থায় তাঁকে মারধর করেছেন। সুইসাইড নোট এবং পুলিশের ডায়েরি অনুযায়ী, দিলীপ যখন তাঁর বাবার সঙ্গে থানায় পৌঁছন, তখন কনস্টেবল যশবন্ত যাদব বিষয়টি ‘মীমাংসা’ করার জন্য তাঁকে ৫০ হাজার টাকা দিতে বলেছিলেন বলে অভিযোগ। দিলীপ তা দিতে প্রত্যাখ্যান করায় তাঁকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। মারধরের পর, আরও এক কনস্টেবল, মহেশ উপাধ্যায়, জরিমানার পরিমাণ কমিয়ে ৪০ হাজার টাকা করেন।
বাড়ি ফিরে দিলীপ তাঁর পরণে থাকা প্যান্টে একটি চিরকুট লিখেছিলেন, যেখানে তাঁর স্ত্রীর বাবা ভানওয়ারি লালা, শ্যালক রাজু এবং দিলীপের জামাইবাবু রজনেশ রাজপুত, দুই কনস্টেবলের দ্বারা হয়রানি এবং তাঁদের টাকা দাবির বিবরণ ছিল। এরপর তিনি তাঁর ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।
মঙ্গলবার সকালে পরিবার যখন দিলীপের মৃতদেহ এবং সুইসাইড নোটটি আবিষ্কার করে, তখন হট্টগোল শুরু হয়। তাএরা পুলিশকে মৃতদেহ নিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে এবং কনস্টেবলদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করে।
আরও পড়ুন: থমকে যেতে পারে সভ্যতার অগ্রগতি, অবলুপ্তির পথে পুরুষ, দাবি গবেষকদের! কিন্তু কেন? কোন পথে ভবিষ্যৎ?
দিলীপের কাকা জিতেন্দ্র জানিয়েছেন, দিলীপ এবং তাঁর স্ত্রীর মধ্যে মঙ্গলবার ঝগড়া হয়েছিল এবং দিলিপ তাঁর স্ত্রীকে তার বাপের বাড়িতে দিয়ে এসেছিলেন। জিতেন্দ্র বলেন, "তাঁর স্ত্রী এবং আত্মীয়স্বজনরা অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। দিলীপের কাছে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয় এবং পুলিশ তাঁকে মারধর করে। ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার পরেই তাঁকে ছেড়ে দেয়। সে তাঁর প্যান্টে লেখা সুইসাইড নোটে সবকিছু বিস্তারিতভাবে লিখেছে।"
দিলীপের বাবা তাঁর অভিযোগে বলেছেন যে, স্ত্রীর পরিবারের নির্দেশে কনস্টেবলরা তাঁকে মারধর করেছেন।
আরও পড়ুন: গোপনীয়তা বজার রাখতে নতুন শাখা ব্যবহার করেছিল আইএসআই, পহেলগাঁও হামলার তদন্তে জানাল এনআইএ
পুলিশ সুপার আরতি সিং বলেন, "গতকাল স্বামীর স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং স্ত্রীর আত্মীয়স্বজনরাও থানায় পৌঁছেছেন। আমরা উভয় পক্ষকেই একটি মীমাংসায় পৌঁছাতে সাহায্য করেছি। লোকটি তাঁর বাড়িতে পৌঁছে আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তাঁর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। একটি অভিযোগে দিলীপের পরিবার তাঁর স্ত্রীর তিনজন আত্মীয় এবং দুই কনস্টেবলের নাম উল্লেখ করেছে। একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চলছে এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
