আজকাল ওয়েবডেস্ক: নয়ডার ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড়। তার মধ্যেই সামনে এসেছে রাজস্থানের ভয়াবহ ঘটনা। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, একজন শুক শিক্ষিকা নিজের গায়ে এবং তিন বছরের মেয়ের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন। দু' জনের মৃত্যু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, তখন ওই শিক্ষিকার শ্বশুরবাড়ির কেউ ছিলেন না ঘরে। জানা গিয়েছে, তিন বছরের শিশু কন্যায় মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয় শিক্ষিকার। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ওই স্কুল শিক্ষিকা একটি চিঠিতে তাঁর মৃত্যুর জন্য স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে পনের এবং অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে, ঘরে চেয়ারে বসে নিজের গায়ে পেট্রোল ঢালেন যুবতী। গায়ে পেট্রোল ঢালেন তিন বছরের শিশু কন্যারও। সেই সময় বাড়িতে স্বামী, শ্বশুরবাড়ির কেউই ছিলেন না। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয়রা ওই বাড়িতে ধোঁয়া দেখেই ওই শিক্ষিকার পরিবারের সদস্যদের জানান। খবর পেয়েই তাঁরা যখন বাড়িতে পৌঁছন, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে ততক্ষণে।
স্কুল শিক্ষিকার মৃত্যুর পর, দেহ নিয়ে বাবা-মা এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের মধ্যে বিবাদও হয়। জানা গিয়েছে, ময়নাতদন্তের পর, বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় দু' জনের দেহ। স্কুল শিক্ষিকার বাবা-মায়ের অভিযোগ, মেয়ের স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন দিনের পর দিন মেয়ের উপর পন নিয়ে অত্যাচার চালিয়েছে। যুবতীর বাবা ওমরাম বিষ্ণোই তার জামাইয়ের বিরুদ্ধে হয়রানি এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছেন।
এর আগেই সামনে এসেছে নিক্কির মৃত্যুর ঘটনা। ঘটনাটি ঘটেছে গ্রেটায় নয়ডায়। পণের দাবিতে এক তরুণীতে নির্মম শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। এমনকী মারতে মারতে তাঁকে সিঁড়ি থেকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। পণের জন্য তরুণীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন স্বামী। অবশেষে মৃত্যু হয় তরুণীর।
তরুণীর নাম, নিক্কি। তাঁর দিদিও ওই বাড়ির এক সদস্যের সঙ্গে বিয়ে করেন। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে নিক্কির বিয়ে হয় সিরসা গ্রামে। বিয়ের ছয় মাস পর থেকেই শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। নিক্কি ও দিদির উপর চরম শারীরিক নির্যাতন করতেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। পণ হিসেবে দুজনের থেকে ৩৬ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন তাঁরা।
নিক্কির দিদি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। মারতে মারতে সন্তানের চোখের সামনেই নিক্কির গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন। বাঁচার জন্য গায়ে আগুন নিয়েই সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় নিক্কির মৃত্যু হয়েছে।
নিক্কির উপর শারীরিক নির্যাতনের একাধিক ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা গেছে, স্বামী বীপিন ও আরও এক মহিলা একের পর এক চড়, থাপ্পড়, কিল, ঘুষি মারতে থাকেন নিক্কিকে। এরপর গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন। সেই অবস্থায় সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নীচে নেমে যান। সেখানে একজন নিক্কির গায়ে জল ছুড়ে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন।
নিক্কির দিদি জানিয়েছেন, বিয়ের সময় মনের মতো পণ না পাওয়ায় দুই বোনের উপরেই অকথ্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। স্বামীরাও তাতে যোগ দিতেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তিনিও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন। পুলিশ আধিকারিক সুধীর কুমার জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতেই হাসপাতাল থেকে থানায় ফোন করে জানানো হয়। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় এই তরুণী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই তাঁকে সফদরজং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। হাসপাতালে যাওয়ার পথেই তরুণীর মৃত্যু হয়। তাঁর দিদির অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই নিক্কির স্বামী বীপিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিক্কির শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেওরের খোঁজেও তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
