আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীপাবলিতে প্রতি বছরের মতো এবারও  ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে সময় কাটালেন প্রধানমন্ত্রী। এবার নৌবাহিনীর সঙ্গে দিন কাটালেন। গোয়া ও কারওয়ার উপকূলে আইএনএস বিক্রান্ত-এ রবিবার রাত্রিযাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সোমবার সেখান থেকেই দেশবাসীর উদ্দেশে বার্তা দেন নরেন্দ্র মোদি।

আইএনএস বিক্রান্ত-এ দাঁড়িয়ে নৌসেনার সাহস ও শৃঙ্খলার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। টেনে আনের অপরেশন সিঁদুরের সময়ে আইএনএস বিক্রান্ত-এর আবদানের কথা। মোদি বলেন, "আইএনএস বিক্রান্ত ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা প্রতিফলিত করে। অপারেশন সিঁদুরের সময় এর নামই পাকিস্তানের ঘুম হারাম (উড়িয়ে দিয়েছে) করে দিয়েছে।"

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, আইএনএস বিক্রান্ত কেবল একটি যুদ্ধজাহাজ নয়, বরং একবিংশ শতাব্দীর ভারতের কঠোর পরিশ্রম, প্রতিভা, প্রভাব এবং প্রতিশ্রুতির সাক্ষ্য। জোর দিয়ে মোদি বলেছেন, "আইএনএস বিক্রান্ত এমন একটি নাম যা যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই শত্রুর সাহস ভেঙে দেয়। এটিই আইএনএস বিক্রান্তের শক্তি।" 

চলতি বছর ২২শে এপ্রিল পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসবাদী হামলার পর, নৌবাহিনী আরব সাগরে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছিল। যার ফলে পাকিস্তান সম্ভাব্য নৌ হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করে। এই মোতায়েনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল আইএনএস বিক্রান্ত। সঙ্গে ছিল ছিল ৮ থেকে ১০টি যুদ্ধজাহাজও। এই মোতায়েনটি নিয়মিত শান্তিকালীন মহড়ার বাইরে ভারতীয় নৌবাহিনীর বৃহত্তম রিয়েল-টাইম অপারেশনাল মুভমেন্টগুলির মধ্যে একটি।

যুদ্ধজাহাজে রাত কাটানোর অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, "আমি এই মুহূর্তে বেঁচে থাকার গুরুত্ব শিখেছি। আপনাদের নিষ্ঠা এত গভীর যে, আমি তার সামান্যই অনুভব করতে পেরেছি। কিন্তু বুঝতে পেরেছি, প্রতিদিন এইভাবে দায়িত্ব পালন করা কতটা কঠিন।"

?ref_src=twsrc%5Etfw">October 20, 2025

প্রধানমন্ত্রী মোদি আরও বলেন যে, রাতে গভীর সমুদ্র এবং ভোরের সূর্যোদয় দেখা তাঁর দীপাবলিকে বিশেষ করে তুলেছে। তাঁর কথায়, "একদিকে সীমাহীন আকাশ, অন্যদিকে অন্তহীন সাগর - তার মাঝে দাঁড়িয়ে আমাদের শক্তির প্রতীক আইএনএস বিক্রান্ত, অসীম শক্তির প্রতীক। সমুদ্রের জলে সূর্যের রশ্মির ঝলক সাহসী সৈন্যদের দ্বারা প্রজ্জ্বলিত দীপাবলির প্রদীপের মতো।" 

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নৌবাহিনীর কর্মীদের দেশাত্মবোধক গান গাইতে এবং অপারেশন সিঁদুরকে চিত্রিত করতে দেখে, "যুদ্ধক্ষেত্রে একজন সৈনিকের অনুভূতি আসলে কোন শব্দেই ধরা পড়ে না।"

মোদি স্মরণ করেন যে, যখন যুদ্ধজাহাজটি জাতির কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছিল, তখন নৌবাহিনী ঔপনিবেশিক ঐতিহ্যের একটি প্রধান প্রতীক ত্যাগ করে এবং ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে একটি নতুন পতাকা গ্রহণ করে। প্রধানমন্ত্রী আইএনএস বিক্রান্তকে আত্মনির্ভর ভারতের একটি শক্তিশালী প্রতীক এবং 'মেক ইন ইন্ডিয়া' উদ্যোগের সাফল্য হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করার জন্য স্বনির্ভরতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কথায়, ""সমুদ্রের মধ্য দিয়ে দেশীয় বিক্রান্ত ভারতের ক্রমবর্ধমান সামরিক সক্ষমতা প্রতিফলিত করে।"

তিনি উল্লেখ করেন যে, গত এক দশক ধরে, ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্বদেশীকরণের দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে, যেখানে গত ১১ বছরে উৎপাদন তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে, প্রায় প্রতি ৪০ দিনে একটি নতুন যুদ্ধজাহাজ বা সাবমেরিন নৌবাহিনীতে যোগদান হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের বিশ্বব্যাপী চাহিদার কথাও তুলে ধরেন এবং আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন যে- ভারত শীঘ্রই বিশ্বের শীর্ষ প্রতিরক্ষা রপ্তানিকারকদের মধ্যে স্থান পাবে। এই রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য তিনি স্টার্টআপ এবং দেশীয় প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলিকে কৃতিত্ব দেন।