আজকাল ওয়েবডেস্ক: কল্পনাও করতে পারেননি, একটি শিল্পচর্চার ছবি তাঁকে মৃত্যুভয়ে কাঁপাতে পারে। গত ৪৮ ঘণ্টা ঘুম নেই, খাওয়া-দাওয়া বন্ধ। পরিচিত ছাড়া কারো ফোন ধরতে সাহস পাচ্ছেন না চেম্বুরের পেশাদার এক ফটোগ্রাফার। শিল্প বা অপশিল্প? প্রশ্ন উঠেছে একটি সাহসী আলোকচিত্র ঘিরে। সম্প্রতি একটি ইনডিপেন্ডেন্ট ফেসবুক পেজে তোলা একটি ফোটো পোস্ট হওয়ার পর থেকে বিতর্কের কেন্দ্রে তিনি। ছবিতে এক তরুণী—নগ্ন, মুখ ঢাকা পানের পাতা দিয়ে, চোখে গাঢ় কাজল, কপালে টকটকে লাল টিপ, মাথায় বধূর মুকুট। হাতে একটি গাছের টব, যেটি দিয়ে তিনি ঢাকা রেখেছেন নিজের গোপনাঙ্গ।
ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই মতবিরোধ তুঙ্গে। কেউ বলছেন—"সাহসী আর্ট, পুরুষতন্ত্রের গালে কষে চড়"—আবার কেউ একে বলছেন "চরম অশালীনতা"। সবকিছু সহ্য করেও চিত্রকার ঠিক ছিলেন। কিন্তু সমস্যা বাঁধে, যখন এক স্বঘোষিত 'ধর্মরক্ষক' ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে ছবি পোস্ট করে লেখেন, "হিন্দু নারীর অবমাননা, এই ফটোগ্রাফারকে উচিত শিক্ষা দিতে হবে!" সঙ্গে দেওয়া হয় অরিজিৎ-এর নাম, লোকেশন, এমনকি তার মাথার দামও ঘোষণা করা হয়!
এরপরই শুরু হুমকির ঝড়। একের পর এক ফোন—কে বলছে গলা কেটে দেবে, কে বা বলছে বোমা পাঠানো হবে! অবশেষে, নিরাপত্তাহীনতায় কাঁপতে কাঁপতে অরিজিৎ পৌঁছন মুম্বই পুলিশের সাইবার অপরাধ দপ্তরে। লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফোটোগ্রাফার বলেন, “আমি শুধু একটা ভাবনার ছবি তুলেছিলাম। এটা শিল্প। কিন্তু এখন নিজের প্রাণ বাঁচাতে দরজাও খুলতে ভয় লাগছে।” শহরের বুকেই যেন গর্জে উঠছে মৌলবাদের নিঃশব্দ সন্ত্রাস।
