আজকাল ওয়েবডেস্ক: পড়াশোনার খরচ আর বাবা-মায়ের প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারার আক্ষেপ। এর জেরে ছাত্রীর চরম পদক্ষেপ। হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হলো ২০ বছর বয়সী এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ। ছত্তিশগড়ের রায়গড় জেলার ঘটনা। ছাত্রীর এহেন চরম পরিণতিতে রীতিমত শোকের ছায়া নেমে এসেছে শিক্ষা মহলে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রীর নাম প্রিন্সি কুমারী। তিনি ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের বাসিন্দা ছিলেন। রায়গড়ের পুঞ্জিপথরা এলাকায় ওপি জিন্দাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটেক দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন প্রিন্সি। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই জেআইটি হস্টেলে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত শনিবার নিজের ঘরে সিলিং ফ্যান থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার হয় প্রিন্সির দেহ। এরপরই হোস্টেল জুড়ে চাঞ্চল্য।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ছাত্রীর মৃতদেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট। তাতে মা-বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রিন্সি লিখেছেন, তিনি তাঁদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারলেন না, উল্টে পড়াশোনার জন্য অনেকটা টাকা খরচ করিয়ে ফেলেছেন। শনিবার দীর্ঘক্ষণ মেয়েকে ফোনে না পেয়ে হস্টেল ওয়ার্ডেনকে জানান পরিবারের লোকেরা। ওয়ার্ডেন গিয়ে দেখেন, ঘর ভিতর থেকে বন্ধ। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেহটি উদ্ধার করে। পরে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদ থেকেই এই চরম পথ বেছে নিয়েছেন প্রিন্সি। তবে এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে।
গত বছর অক্টোবরে এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। পড়াশোনার অত্যধিক চাপে জেরবার। প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ। দুইয়ের জেরে চরম পদক্ষেপ নেন ১৭ বছরের এক ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষার্থী। বাবা, মাকে চিঠি লিখে আত্মঘাতী হয়েছিলেন ছাত্রী। নিজের আবাসনের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছিল নয়া দিল্লির জামিয়া নগর এলাকায়। ওই এলাকার শাহীন বাগের ওখলা মার্কেটের মাঝেই আত্মঘাতী হন ১৭ বছরের কিশোরী। শনিবার পুলিশ সূত্রে খবর, সাততলা আবাসনের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন কিশোরী। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, সদ্য দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার পরেই জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পরীক্ষার্থী। কিন্তু পড়াশোনার অত্যধিক চাপ সামলাতে পারছিলেন না। অতীতে একাধিকবার মা'কে জানিয়েছিলেন, পরীক্ষায় পাশ না করলে জীবন শেষ পর্যন্ত করতে পারেন। অবশেষে চরম পদক্ষেপ নেন তিনি।
কিশোরীর ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়। যেখানে কিশোরী জানিয়েছিলেন, জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় তিনি পাশ করতে পারেননি। চাপ সামলাতে না পেরে, পরিবারের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় আত্মঘাতী হন তিনি। চিঠিতে লেখা ছিল, 'আমি পরীক্ষায় পাশ করিনি। তাই ক্ষমা করো।' এদিকে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে কিশোরীর আত্মহত্যার মুহূর্তটি ধরা পড়ে। যা সোশ্যাল মিডিয়াতেও ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
