আজকাল ওয়েবডেস্ক: মাত্র ৪৫ দিন বয়স। সদ্যোজাতকে ঘিরে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। খাওয়াদাওয়া, পোশাক পরিবর্তন, সব কিছুই সকলে একসঙ্গে সামলাচ্ছিলেন। এর মাঝেই চরম অবসাদে ভুগতে শুরু করেন মা। যার জেরেই এক ভয়াবহ ঘটনার সম্মুখীন হলেন সকলে। 

 

ঘটনার দিন, বাড়ির বাইরে জামাকাপড় শুকোতে গিয়েছিলেন সদ্যোজাতর পিসি। হঠাৎ সদ্যোজাতর মায়ের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, ৪৫ দিনের শিশুর গলা কাটা। রক্ত ভেসে যাচ্ছে ওই ঘর। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের বাকি সদস্যদের ও প্রতিবেশীরা ডেকে পাঠান তিনি। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় পুলিশে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেই পুলিশকে মাকে জেরা শুরু করে। কারণ মৃত সদ্যোজাতর মায়ের হাতেই ছিল রক্তের দাগ। জেরায় সদ্যোজাত সন্তানকে খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশে। পুলিশ আধিকারিক দীশেস আগারওয়াল জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দ্বারকাপুরী এলাকায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। সদ্যোজাতকে খুনের অভিযোগে মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৩ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। 

 

পরিবারের সদস্যদের তরফে জানা গেছে, সন্তানের জন্মের আগে থেকেই অবসাদে ভুগছিলেন যুবতী। সন্তানের জন্মের পরেও অবসাদ কাটেনি। সম্ভবত অবসাদের জেরেই সদ্যোজাত সন্তানকে খুন করেছেন তিনি। কতদিন ধরে মানসিক অসুস্থতায় যুবতী ভুগছিলেন, কোনও ওষুধ খেতেন কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। 

 

আরও পড়ুন: স্বামীর সঙ্গে একঘেয়ে লাগছিল, ৮ বছর ধরে লুকিয়ে প্রেম, উদ্দাম যৌনতার টানে যুবতী যা ঘটালেন

 

প্রসঙ্গত, চলতি মাসে দিন কয়েক আগেই এমন এক নৃশংস ঘটনা ঘটেছিল ইন্দোরে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ইন্দোরের তেজাজি নগর এলাকায়।‌ পুলিশ সূত্রে খবর, জন্মদিনে দুই বছরের শিশুকন্যাকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে তার নিজের মায়ের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, শিশুকন্যা কান্নাকাটি করছিল। সেই কারণেই রাগের মাথায় শিশু কন্যাসন্তানকে বেধড়ক মারধর করে ওই যুবতী। তার জেরেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে দুই বছরের শিশুকন্যা। 

 

তেজাজি নগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, শিশুকন্যার জন্মদিন উপলক্ষে বাড়িতেই ছিল তার মা। হঠাৎ কান্নাকাটি শুরু করে সে। তার জেরেই বিরক্ত হয় তার মা। রাগের মাথায় ঘর থেকে একটি শক্ত লাঠি নিয়ে শিশুটিকে মারতে শুরু করে। প্রথমেই শিশুকন্যার মাথায় সজোরে লাঠি দিয়ে আঘাত করে সে। সেই আঘাতেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে শিশুকন্যা। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছে। 

 

ঘটনাটির বিষয়ে জানাজানি হয় ওইদিন সন্ধ্যায়। অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পরেই আঁতকে ওঠেন শিশুকন্যার বাবা। মেয়ের নিথর দেহ দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। স্ত্রীর আচরণে‌ সন্দেহ হতেই তড়িঘড়ি পুলিশে খবর দেন ওই ব্যক্তি। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় তেজাজি নগর থানার পুলিশ। শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় তারা। 

 

পাশাপাশি কন্যাসন্তানকে খুনের অভিযোগে ঘাতক মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। দাম্পত্য কলহ, মানসিক অবসাদ, নাকি কন্যাসন্তান অপছন্দের, কোন কারণে শিশুটিকে খুন করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছে পুলিশ। যুবতীর মানসিক স্বাস্থ্যের কোনও সমস্যা ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

 

প্রসঙ্গত, চলতি বছর এপ্রিল মাসেই গুজরাটের আহমেদাবাদের অম্বিকানগর এলাকায় এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল। ২২ বছরের তরুণী করিশ্মা বাঘেল পুলিশকে জানিয়েছিল, তার তিন মাসের সন্তানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর পুলিশ খোঁজ শুরু করে। বাড়ির আশেপাশে খোঁজার পর ভূগর্ভস্থ জলের ট্যাঙ্ক থেকে শিশু সন্তানের দেহ উদ্ধার করেছে তারা। 

 

পুলিশের সন্দেহ হতেই করিশ্মাকে জেরা শুরু করে। প্রথম থেকেই অসংলগ্ন কথা বলছিল সে। একবার জানায়, সে স্নান করতে গিয়েছিল। সেই সময় শিশুটি ঘরেই ছিল। স্নানঘর থেকে বেরিয়ে সন্তানকে আর দেখতে পায়নি। পরে জানা যায়, নিজের সন্তানকে জলের ট্যাঙ্কে চুবিয়ে খুন করে সে। দেহ সেখানে রেখেই পুলিশে তিনি খবর দেয়। 

 

পরিবারের তরফে জানা গেছে, অন্তঃসত্ত্বা থাকাকালীন করিশ্মার মানসিক ও শারীরিকভাবে নানা বদল আসে। ক্ষণে ক্ষণে শরীর খারাপ হত তাঁর। যার জন্য মেজাজ বিগড়ে যেত। সন্তানের জন্মের পরেও মেজাজ হারিয়ে ফেলত। শিশুটি কান্নাকাটি করত বলে, খুব বিরক্ত হত। কিন্তু নিজের সন্তানের সঙ্গে নৃশংস কাণ্ড যে ঘটাবে, তা টের পাননি কেউ।