আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেঙ্গালুরুর একটি পেয়িং গেস্টে (PG) থাকা এক কলেজ ছাত্রী বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত, আশরাফ নামের ওই ব্যক্তি, পুলিশে অভিযোগ দায়েরের পর গ্রেপ্তার হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় একটি এফআইআর নথিভুক্ত হয়েছে।
ছাত্রী অভিযোগ করেছেন, মাত্র ১০ দিন আগে তিনি আশরাফের বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকতে শুরু করেছিলেন। অভিযোগ অনুযায়ী, ২ আগস্ট গভীর রাতে আশরাফ তাঁর ঘরে এসে বলেন, তিনি খাবার ও থাকার ব্যবস্থা দেবেন, তবে তার জন্য ছাত্রীকে তাঁর সঙ্গে ‘সহযোগিতা’ করতে হবে। ছাত্রী ‘না’ বললে, আশরাফ জোর করে তাঁকে একটি গাড়িতে তোলেন এবং এক ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন।
ছাত্রী তাঁর অভিযোগে বলেন, “০২/০৮/২০২৫ তারিখে রাত ১২:৪১ মিনিট নাগাদ, আমি যখন পিজিতে বসে ছিলাম, তখন আশরাফ এসে আমাকে জানায়, সে আমাকে খাবার এবং থাকার সুবিধা দেবে, তবে আমাকে তার সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে। আমি অস্বীকার করলে সে আমার হাত ধরে টেনে গাড়িতে তোলে এবং একটি ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে সে আমাকে যৌন নিগ্রহ করে।”
নির্যাতিতা তরুণী আরও জানান, তিনি তাঁর এক বন্ধুকে লোকেশন পাঠানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তখন ইন্টারনেট বা নেটওয়ার্ক না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। এরপর, অভিযোগ অনুযায়ী, রাত ১:৩০ থেকে ২:১৫-র মধ্যে আশরাফ তাঁকে আবার পিজিতে ফেলে রেখে চলে যান। এই ঘটনার ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করে আশরাফকে গ্রেপ্তার করে। নির্যাতিতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে তদন্তকারী দল।
এই ঘটনাটি এমন সময়ে ঘটল, যখন ঠিক এক মাস আগেই বেঙ্গালুরুতে আরেকটি PG-তে আরেক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন রবি তেজা রেড্ডি নামের পেয়িং গেস্ট মালিক। অভিযোগ ছিল, এক ২১ বছর বয়সি নার্সিং ছাত্রী অন্য এক মহিলার তিনটি সোনার আংটি চুরি করার কথা স্বীকার করলে, রেড্ডি পুলিশে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর ছাত্রীর অনুরোধ সত্ত্বেও, সে তাঁকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।
দুই ঘটনার পর পর সামনে আসায় বেঙ্গালুরু শহরে পেয়িং গেস্টগুলিতে ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠছে। ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে, এবং অনেকেই শহরের PG সংস্কৃতির উপরে প্রশাসনিক নজরদারি জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন।
বেঙ্গালুরু পুলিশের এক মুখপাত্র জানান, “আমরা অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছি এবং তদন্ত চলছে। এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। ভুক্তভোগীর পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে, এবং তাকে সমস্তরকম সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।”
মানবাধিকার কর্মী ও নারী সংগঠনগুলি ঘটনাটিকে অত্যন্ত লজ্জাজনক ও উদ্বেগজনক বলে চিহ্নিত করেছে। তাঁদের দাবি, শহরের PG-গুলিতে নিয়মিত পরিদর্শন, মালিকদের পরিচয় যাচাই, এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য অভিযোগ জমা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকা অত্যন্ত জরুরি।
এই ঘটনা ফের একবার শহরের পেয়িং গেস্টগুলিতে মহিলাদের নিরাপত্তা ও মানবিক অধিকারের প্রশ্ন তুলে দিল। এখন দেখার, প্রশাসন ও সমাজ কীভাবে এই সঙ্কটের মোকাবিলা করে।
