আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিন কয়েক আগেই ছেলে রাহুল গান্ধী রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে, ভোট চুরির অভিযোগ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ সময় ধরে তিনি একেবারে তথ্য প্রমাণ তুলে ধরেছিলেন। রাহুল ভোট চুরি-কে সকলের সামনে নিয়ে আসতেই এবার গেরুয়া শিবিরের নিশানায় তাঁর মা।
বিজেপির বড় অভিযোগ কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে। কী অভিযোগ? অভিযোগ, সোনিয়া গান্ধী নাকি ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার আগেই, ভোটার তালিকায় নাম তুলেছিলেন। কমিশনের সঙ্গে গোপোন আঁতাত ছিল।
বিজেপির অমিত মালব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মর্মে পোস্ট করেছেন। সঙ্গে প্রমাণ হিসেবে একটি ছবিও দিয়েছেন, যদিও তার তথ্য-সত্যতা যাচাই করেনি আজকাল ডট ইন। অমিত মালব্য পোস্টে বলছেন, '১৯৮০ সালে তাঁর৯সোনিয়া গান্ধী) নাম প্রথম তালিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণের তিন বছর আগে এবং তার ইতালীয় নাগরিকত্ব থাকাকালীন। সেই সময়ে, গান্ধী পরিবার প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সরকারি বাসভবন ১, সফদরজং রোডে থাকতেন। ততক্ষণ পর্যন্ত, সেই ঠিকানায় নিবন্ধিত ভোটাররা ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, সঞ্জয় গান্ধী এবং মানেকা গান্ধী। ১৯৮০ সালে, নতুন দিল্লি সংসদীয় আসনের ভোটার তালিকা সংশোধন করা হয়েছিল ১ জানুয়ারী, ১৯৮০ তারিখকে যোগ্যতার তারিখ হিসাবে। এই সংশোধনের সময়, সোনিয়া গান্ধীর নাম যুক্ত করা হয়েছিল, ভোটকেন্দ্র ১৪৫-এর ৩৮৮ নম্বর ক্রমিক নম্বরে।'
আরও পড়ুন: জঙ্গিদের নজরে পুরীর জগন্নাথ মন্দির! দেওয়ালে লিখে দেওয়া হল মারাত্মক হুমকি, আতঙ্কে কাঁপছেন ভক্তরা
ঠিক তার পরেই তিনি লিখেছেন, 'এই প্রবেশ আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন, যেখানে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে একজন ব্যক্তির ভারতীয় নাগরিকত্ব থাকা বাধ্যতামূলক। ১৯৮২ সালে তীব্র প্রতিবাদের পর, তার নাম তালিকা থেকে মুছে ফেলা হয়। কিন্তু ১৯৮৩ সালে আবার দেখা যায়।কিন্তু তার পুনর্বহালের ফলে গুরুতর প্রশ্ন ওঠে। সেই বছর ভোটার তালিকার নতুন সংশোধনীতে, সোনিয়া গান্ধীর নাম ভোটকেন্দ্র ১৪০-এর ২৩৬ নম্বর ক্রমিক নম্বরে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। নিবন্ধনের যোগ্যতার তারিখ ছিল ১ জানুয়ারী, ১৯৮৩ । তাঁকে ৩০ এপ্রিল, ১৯৮৩ তারিখে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে, সোনিয়া গান্ধীর নাম মৌলিক নাগরিকত্বের প্রয়োজনীয়তা পূরণ না করেই দুবার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল - প্রথমে ১৯৮০ সালে একজন ইতালীয় নাগরিক হিসেবে এবং তারপর আবার ১৯৮৩ সালে, আইনত ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার কয়েক মাস আগে।' পোস্টের একেবারে শেষ দিকে মালব্য লিখেছেন, 'আমরা এমনকি জিজ্ঞাসাও করছি না যে রাজীব গান্ধীর সঙ্গে বিয়ের পর ভারতীয় নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে তাঁর ১৫ বছর সময় লেগেছিল কেন?'
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর দাবি করেছেন যে সোনিয়া গান্ধী ১৯৪৬ সালে ইতালিতে জন্মগ্রহণকারী সোনিয়া মাইনো, ১৯৮০ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত, ভারতীয় নাগরিক হওয়ার এক বছর আগেই তালিকায় তাঁর নাম যুক্ত করা হয়েছিল।
Sonia Gandhi’s tryst with India’s voters’ list is riddled with glaring violations of electoral law. This perhaps explains Rahul Gandhi’s fondness for regularising ineligible and illegal voters, and his opposition to the Special Intensive Revision (SIR).
— Amit Malviya (@amitmalviya)
Her name first appeared… pic.twitter.com/upl1LM8XhlTweet by @amitmalviya
এর আগে, ৭ আগস্ট, ইন্দিরা ভবনে রাহুল সাংবাদিক বৈঠক করে ভোট চুরির গুরুতর অভিযোগ তোলেন। লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে দলীয় অন্তর্তদন্তে যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে ভোট চুরি হয়েছে বলে মনে করেন কংগ্রেস নেতা। কীভাবে কারচুপি হয়েছে, তা নিখুঁতভাবে তুলে ধরেন রাহুল। তাঁর তথ্যে ভুল রয়েছে, প্রমাণ করুক কমিশন—কমিশনকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা। তাঁর আরও অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন ডিজিটাল ভোটার তালিকা দিতে অস্বীকার করেছে। বিধি বদলে ৪৫ দিনের মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ মুছে দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন আসলে লুকোতে চাইছে কী?
রাহুল যে তথ্য জনসম্মুখে রেখেছেন, সেগুলি গুরুতর। তিনি জানিয়েছেন, গুরুপ্রীত সিং ডাং। কর্ণাটকের মহাদেবপুরার ভোটার। ভোটার তালিকায় ৪ জায়গায় নাম রয়েছে তাঁর। আদিত্য শ্রীবাস্তব। কর্ণাটকের ২ জায়গায়, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশের ভোটার। বিশাল সিং। উত্তরপ্রদেশ এবং কর্ণাটকের ভোটার। ভোটার তালিকায় ছবি সহ নাম আছে, কিন্তু বাড়ির ঠিকানা ‘০’‘#’। মহাদেব পুরা বিধানসভা কেন্দ্রে ৪০ হাজার এমন ভুয়ো ঠিকানার ভোটার! অবাক করা তথ্য হল বাড়ি নং ৩৫- ভোটার ৮০ জন। এক কামরার বাড়িতে এতজন ভোটার! বাড়ি নং—৭৯১, ভোটার সংখ্যা ৪৬। বাণিজ্যিক ঠিকানায় থাকেন ৬৮ ভোটার! কংগ্রেসের তদন্তকারী দল সংশ্লিষ্ঠ এলাকায় গিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে অস্তিত্ব খুঁজে পাননি ওই সব ভোটারদের। শকুন রানি। ৭০ বছরের বৃদ্ধা। ফর্ম ৬ পূরণ করেছেন দু’মাসে দু’বার। ভোটার তালিকায় দুটি জায়গায় নাম রয়েছে তাঁর। কংগ্রেসের প্রশ্ন, ফর্ম ৬ কেবল নতুন ভোটারদের জন্য। ৭০ বছরের শকুন রানিদের মতো এভাবেই হাজার হাজার ভুয়ো ভোটার রয়েছে।
