আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভোটমুখী বিহারে ভোটাধিকার যাত্রা করছেন রাহুল গান্ধী। রবিবার আরারিয়ায় এক সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে গান্ধী অভিযোগ করেন যে, নির্বাচন কমিশনের মদতে পরিচালিত এসআইআর অনুশীলন ভোট চুরির একটি প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতি। তিনি বলেন, 'সরকারি খাতের ইউনিটগুলিকে বেসরকারিকরণের পর নরেন্দ্র মোদি সরকার এখন নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় এসআইআরের মাধ্যমে দরিদ্রদের ভোট চুরি করতে চায়।'
একইসঙ্গে রাহুল বলেন, এসআইআর সংবিধান বিরোধী। বিহারের মানুষ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি এবং তার শরিক দলগুলিকে জবাব দেবে। বিরোধী শিবির, ইন্ডিয়া জোট যে এই এসআইআর মানবে না কোনওভাবে, এদিন তাও সাফ জানান রাহুল।
বিহারের ২৫টি জেলা জুড়ে ভোটাধিকার যাত্রা করবেন রাহুল। এর আগেই তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেছেন। অভিযোগ ভোট চুরির। তথ্য-সহ প্রমাণ দেখিয়েছেন। তাঁর ঘণ্টাখানেকের বক্তব্যে একেবারে শোরগোল দেশের রাজনীতিতে। ১৩ আগস্ট তিনি দাবি করেন, বিহারের খসড়া তালিকায় উল্লিখিত মৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে বসেছিলেন চা চক্রে। দিনকয়েক আগেই বিহারে খসড়া ভোতার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে ৬৫ লক্ষ মানুষ বাদ পড়েছেন তালিকা থেকে। তাদের মধ্যে ২২ লক্ষের বেশি ভোটার মৃত, তথ্য তেমনটাই। ওই মৃত ভোটার তালিকার কয়েকজন, অর্থাৎ যাঁরা মৃত হিসেবে ঘোষিত, তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে চা-চক্রে বসেছিলেন কংগ্রেস নেতা। নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন রাহুল। তাতে লিখেছেন, জীবনের নানা মজার এবং অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতার মধ্যে এটি অন্যতম। কারণ এর আগে মৃত ভোটারদের সঙ্গে চা খাওয়ার সুযোগ হয়নি তাঁর। তিনি নির্বাচন কমিশনকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই কারণে।
আরও পড়ুন: গোপন অভিসন্ধি? বিহারের ভোটার তালিকায় দুই পাকিস্তানি মহিলা! তথ্য সামনে আসতেই
অন্যদিকে, এই ভোতাধিকার যাত্রা থেকেই আরজেডি নেতা, তেজস্বী যাদব, মঙ্গলবার নওয়াদায় রাহুল গান্ধীর পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, 'আগামী লোকসভা ভোটে রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর জন্য একজোট হয়ে কাজ করব।' রাহুল কী বললেন একথা শুনে? বললেন না কিছুই। কেবল হাসলেন। সৌজন্যমূলক হাসি। কী বলেছেন তেজস্বী যাদব? তিনি এদিন বলেন, নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন সরকার 'খট্টারা' হয়ে গেছে এবং এটিকে জরুরিভাবে প্রতিস্থাপন করা দরকার। তরুণদের এখন সুযোগ পাওয়া উচিত। বিহারের জন্য আমাদের একটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। তরুণরা সংকল্প নিয়েছে যে তারা এই পুরনো এবং সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে এবং পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের পরে রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিশ্চিত করবে।'
উল্লেখ্য, বিহারের বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়া ঘিরে বিতর্কের আবহেই নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করে 'ভোট চুরি'র অভিযোগ তুলেছেন রাহুল গান্ধী। এতে শামিল অন্যান্য বিরোধী দলগুলিও। এবার লোকসভার বিরোধী দলনেতার অভিযোগের পাল্টা মুখ খুলল নির্বাচন কমিশন। রাহুলের অভিযোগ 'সংবিধানের অবমাননা' বলে তোপ দেগেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। তাঁর সাফ কথা, "নির্বাচন কমিশনের কাঁধে বন্দুক রেখে ভারতের ভোটারদের নিশানা করা হচ্ছে। রাজনীতি করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন সকলের কাছে স্পষ্ট করে দিতে চায়, কমিশন কোনও ভেদাভেদ না করে নির্ভয় হয়ে ধনী-দরিদ্র, প্রবীণ, মহিলা, যুবা, প্রত্যেক শ্রেণি, প্রত্যেক ধর্মের ভোটারদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। ভবিষ্যতেও থাকবে। কমিশন এবং ভোটাররা তুচ্ছ রাজনীতিতে ভয় পায় না।"
