আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিজেপিকে আক্রমণ করতে গিয়ে সাঙ্ঘাতিক ভুল করে বসলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। শনিবার শাসক দলকে আক্রমণ করতে গিয়ে তাঁর দাবি, ২০২০ সালে কৃষি আইনের বিরোধীতা করায় সিনিয়র নেতা অরুণ জেটলি তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু জেটলি ২০১৯ সালের আগস্ট মাসেই প্রয়াত হয়েছেন। এরপরেই তাঁকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। দীর্ঘ অসুস্থতার পর নয়াদিল্লির এইমসে জেটলির মৃত্যুর প্রায় এক বছর পর, ২০২০ সালের জুন মাসে কেন্দ্র তিনটি কৃষি আইন চালু করে। ওই বছর সেপ্টেম্বরে এই বিষয়ে অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
জেটলির কাঁধে বন্দুক রেখে রাহুল কৃষি আইনের বিরোধিতার করে কেন্দ্রকে এ দিন আক্রমণ করেন। দিল্লিতে বার্ষিক আইনি সম্মেলন-২০২৫-এ ভাষণ দিতে গিয়ে রাহুল জেটলির সঙ্গে কথিত কথোপকথনের বর্ণনা দেন এবং বলেন, “আমার মনে আছে যখন আমি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলাম, তখন অরুণ জেটলিজিকে আমাকে হুমকি দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছিল। তিনি আমাকে বলেছিলেন, “যদি তুমি সরকারের বিরোধিতা করে, কৃষি আইনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাও, তাহলে আমাদের তোমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে বললাম, আমার মনে হয় না তুমি কার সঙ্গে কথা বলছো তা বুঝতে পারছো।””
আরও পড়ুন: পণ্ডিত নেহরুর স্ত্রী কমলাকে চেনেন? ৩৬ বছর বয়সে মারা গিয়েও সমাজে স্থায়ী প্রভাব রেখে গিয়েছেন
দিল্লির সীমান্তে কিছু কৃষকের ব্যাপক বিক্ষোভের পর ২০২১ সালের নভেম্বরে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বাণিজ্য ও বাণিজ্য (প্রচার ও সুবিধা) আইন, ২০২০, কৃষক (ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষা) মূল্য নিশ্চিতকরণ ও কৃষি পরিষেবা চুক্তি আইন, ২০২০ এবং অত্যাবশ্যকীয় পণ্য (সংশোধন) আইন, ২০২০ বাতিল করা হয়।
#WATCH | Delhi: At the Annual Legal Conclave- 2025, Lok Sabha LoP and Congress MP Rahul Gandhi says, "I remember when I was fighting the farm laws, Arun Jaitley ji was sent to me to threaten me. He told me "if you carry on opposing the govt, fighting the farm laws, we will have… pic.twitter.com/8RJWmHo9fE
— ANI (@ANI)Tweet by @ANI
বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর রাহুলকে কৃষি আইনের সময়ের কথা এবং জেটলির প্রয়াণের তারিখের কথা মনে করিয়ে দিয়ে ক্ষমা চাইতে বলেছেন। অনুরাগ বলেন, “রাহুল গান্ধী প্রতিদিন নতুন মিথ্যা প্রচার করছেন... আমি তাঁকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে অরুণ জেটলি ২৪ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মারা যান এবং কৃষি আইনগুলি যথাক্রমে ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ এবং ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে লোকসভা এবং ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে রাজ্যসভায় পাস হয়... যখন বিলটি আসে, তখন অরুণ জেটলি মারা গিয়েছেন। রাহুলের উচিত জেটলির পরিবার, বিজেপি এবং সমগ্র দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া।”
প্রয়াত বিজেপি নেতার ছেলে রোহন জেটলি রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, বাবা একজন ‘কট্টর গণতন্ত্রী’ ছিলেন যিনি ঐক্যমত্য তৈরিতে বিশ্বাসী ছিলেন।
জেটলি মোদি সরকারের প্রথম দফায় একজন বিশিষ্ট সদস্য ছিলেন। এই সময়ে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী (২৬ মে ২০১৪ থেকে ৯ নভেম্বর ২০১৪ এবং ১৩ মার্চ ২০১৭ থেকে ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত) এবং অর্থমন্ত্রী (২০১৪ থেকে ২০১৯) এর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। তিনি ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভায় বিরোধীদলীয় নেতা এবং ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভায় বিজেপির দলনেতা ছিলেন। বাজপেয়ী সরকারের সময় তিনি বাণিজ্য ও শিল্প এবং আইন ও বিচারমন্ত্রীও ছিলেন। মোদী সরকারের সময়, তিনি পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি), দেউলিয়া ও দেউলিয়া কোড বাস্তবায়ন এবং ব্যাংকিং খাতের সংস্কারের মতো বড় অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ ছিলেন।
