আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের রায়সেন জেলায় ছয় বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ। এই ঘটনায় সম্প্রতি পুলিশের চরম ব্যর্থতা সামনে এসেছে। ধর্ষণে অভিযুক্ত সলমনের গ্রেপ্তারি না হওয়ায় এলাকার মানুষ ব্যাপক ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অভিযোগ, অপরাধ যেখানে ঘটেছে, সেই গওহরগঞ্জ এলাকাতেই অভিযুক্ত সলমনকে ভিডিওতে প্রকাশ্যে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। ঘটনার পাঁচ দিন পার হয়ে গেলেও ২৩ বছর বয়সি অভিযুক্ত যুবককে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২১ নভেম্বর এই ঘটনা ঘটে। বাইরে খেলছিল ছয় বছরের ওই শিশু। সলমন তাকে চকোলেটের লোভ দেখিয়ে পাশের একটি জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। তার পর সেখান থেকে পালিয়ে যায়। মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবার খোঁজাখুঁজি শুরু করে। তারা জানতে পারে, শেষবার তাকে সলমনের সঙ্গেই দেখা গিয়েছিল। নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে প্রথমে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়ার পর তাকে ভোপালের 'এইমস'-এ পাঠানো হয়।

ঘটনার পর অভিযুক্ত সলমনের দুটি পৃথক ভিডিও সামনে আসে। এরপর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। প্রথম ভিডিওতে তাকে এক ট্রাকচালককে রাস্তা দেখাতে দেখা যায়। দ্বিতীয় ফুটেজে সলমনকে একটি স্থানীয় দোকান থেকে সিগারেট কিনতে দেখা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ফুটেজগুলি গওহরগঞ্জেরই এবং সেখানে সলমনকেই দেখা যাচ্ছে।

পুলিশ আধিকারিক মিথিলেশ কুমার শুক্লা জানিয়েছেন, সলমনকে গ্রেপ্তার করার জন্য বর্তমানে ১০ থেকে ১১টি দল কাজ করছে। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, "যেখানেই সূত্র মিলবে, দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করা হবে।" প্রায় ৩০০-রও বেশি পুলিশ অফিসারকে অভিযুক্তকে খোঁজার কাজে লাগানো হয়েছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় সলমনের পোস্টার লাগানো হয়েছে। এমনকী ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছে। তার খোঁজ দিতে পারলে ৩০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণাও করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারিতে দেরি হওয়ায় গওহরগঞ্জে পরিস্থিতি ক্রমে বেসামাল হয়ে উঠছে। কার্যত অঘোষিত কার্ফু জারি হয়েছে এলাকায়। রাস্তাঘাট ফাঁকা। ছয়টি জেলার কুইক রেসপন্স ফোর্স-সহ প্রায় ৫০০-রও বেশি পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। খবর অনুযায়ী, বুধবার, ঘটনার পাঁচ দিনের দিন, স্কুল মাঠে সলমনের গ্রেপ্তারির দাবিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ হয়। কিন্তু জমায়েত শেষ হওয়ার পর একদল যুবক মুসলিম বসতির দিকে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। লাঠিচার্জ করে। এতে ক্ষুব্ধ যুবকরা পুলিশের দিকে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে।

জনরোষ এবং পুলিশের আপাত গাফিলতির কারণে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব একটি বৈঠক করেন। তিনি নির্দেশ দেন, রায়সেনের পুলিশ সুপারকে সদর দপ্তরে বদলি করা হবে এবং মিসরোদ থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।