আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধ্যরাতে বাড়ি ফেরার পথে গণধর্ষণের শিকার ৫০ বছরের এক বিধবা প্রৌঢ়া। গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পূর্ব পরিচিতদের বিরুদ্ধেই। ঘটনার এক সপ্তাহ পর আসল ঘটনা প্রকাশ্যে এল। ২৪ ঘণ্টায় লাগাতার গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন নির্যাতিতা। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটে। পুলিশ জানিয়েছে, গত সপ্তাহে গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের গির সোমনাথ জেলার উনা শহরে। ৫০ বছর বয়সি এক বিধবা প্রৌঢ়া গণধর্ষণের শিকার হন। ২৪ ঘণ্টায় লাগাতার তিন যুবকের যৌন লালসার শিকার হন তিনি। তিন অভিযুক্তই পেশায় মৎস্যজীবী। বুধবার তিন অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

 

মঙ্গলবার অসহ্য পেটের যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন বিধবা প্রৌঢ়া। তাঁর পরিবারের সদস্যরাই তাঁকে নিয়ে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকদের জানান, গত সপ্তাহে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন সম্প্রতি। সেই হাসপাতালের চিকিৎসকরা এরপর পুলিশে বিষয়টি জানান। এরপরই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। 

 

নির্যাতিতা সেদিন নববন্দর মেরিন থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। তিনজনের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, দশ‌ বছর আগে প্রৌঢ়ার স্বামী মারা যান। তারপর থেকে একাই রোজগার করে সংসার চালান। শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তিনি। 

 

পুলিশকে নির্যাতিতা প্রৌঢ়া জানান, এক সপ্তাহ আগে মান্ডভি চেকপোস্ট থেকে গ্রামের দিকে ফিরছিলেন।‌ রাতে কোনও যানবাহন পাননি। তখনই ওই তিন অভিযুক্ত বাইকে করে যাচ্ছিল। প্রৌঢ়ার সামনে বাইক নিয়ে পথ আটকায় তারা। তিনজনেই নির্যাতিতার পূর্ব পরিচিত ছিল। বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দিতেই প্রৌঢ়া রাজি হয়ে যান। 

 

বাইকে চড়ার পর খানিকটা যাওয়ার পরেই প্রৌঢ়াকে নিয়ে তিন যুবক নির্জন একটি জায়গায় চলে যায়। সেখানে প্রথমে তিনজনে ধর্ষণ করে তাঁকে। এরপর এক অভিযুক্তের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আবারও গণধর্ষণ করে প্রৌঢ়াকে। পরদিন বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার পরেও ক্রমাগত হুমকি দেয়। বিষয়টি বাইরে ফাঁস করলেই আবারও ধর্ষণের হুমকি দিয়েছিল প্রৌঢ়াকে। 

 

আরও পড়ুন: কোমরে অসহ্য যন্ত্রণা, ৮টি জ্যান্ত ব্যাঙ চিবিয়ে খেলেন বৃদ্ধা! টোটকা মানতে গিয়েই শেষমেশ চরম পরিণতি

 

প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, কয়েক সপ্তাহ আগেই গুজরাটের ভদোদরায় আরও একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘিরে শোরগোল পড়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, নভোপুরা থানায় শ্বশুর ও দেওরের বিরুদ্ধে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়েছেন তরুণী। এমনকী তাঁদের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করেছেন তিনি। পাশাপাশি অভিযোগ জানিয়েছেন নিজের স্বামীর বিরুদ্ধেও। তরুণীর অভিযোগ, শ্বশুর ও দেওরের কেচ্ছা যাতে ফাঁস না করা হয়, তার জন্য রোজ ব্ল্যাকমেল করতেন স্বামী। এমনকী তাঁর অশালীন ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন। 

 

তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শ্বশুরবাড়িতে পা রাখার পর থেকে অশান্তি শুরু হয়। শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা দ্রুত তাঁকে সন্তানধারণের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেন। শ্বশুরবাড়ির সকলের বক্তব্য ছিল, তাঁর বয়স বেড়েছে। তাই সন্তানধারণের জন্য হয়তো অক্ষম। তাই আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তানধারণের প্রস্তাব দেন। কিন্তু এরপরেই দম্পতির মেডিক্যাল টেস্ট হয়। পরীক্ষায় জানা যায়, স্বামীর শুক্রাণুর সংখ্যা অত্যন্ত কম। তাই সাধারণভাবে সঙ্গমের মাধ্যমে সন্তানধারণ সম্ভব নয়। আইভিএফ পদ্ধতিতেও সন্তানধারণ করা সম্ভব নয়। 

 

এরপরই তরুণী প্রস্তাব দেন, তিনি সন্তান দত্তক নিতে চান। কিন্তু তাতে আপত্তি ছিল শ্বশুরবাড়ির সকল সদস্যের। নির্যাতিতার অভিযোগ, ২০২৪ সালে জুলাই মাসে তিনি ঘরেই ঘুমিয়ে ছিলেন। আচমকা ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন শ্বশুর। সেদিনই প্রথম শ্বশুর ধর্ষণ করেন পুত্রবধূকে। চিৎকার করলেও কেউ ছুটে এসে রক্ষা করেননি। বরং বারবার চড়, থাপ্পড় মারতে থাকেন বধূকে। 

 

তরুণী আরও জানিয়েছেন, ঘটনাটি স্বামীকে জানিয়েও লাভ হয়নি। উল্টে তাঁকে মুখে কুলুপ এঁটে থাকার হুমকি দিয়েছিলেন স্বামী। এও জানিয়েছিলেন, এই ঘটনাটির বিষয়ে বাইরে জানালে তাঁর নগ্ন ছবি সমাজমাধ্যমে ফাঁস করে দেবেন। এরপরেও শ্বশুর তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। কিন্তু তারপরেও তরুণী গর্ভবতী হননি। 

 

যৌন নির্যাতন আরও বেড়ে যায় গত বছরের ডিসেম্বর মাস নাগাদ। শ্বশুরের মতোই বিবাহিত দেওর চুপিসারে ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করেন বউদিকে। এরপর একাধিকবার দেওর তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেছেন তরুণী। শেষমেশ চলতি বছরে জুন মাসে তরুণী গর্ভবতী হন। কিন্তু আগস্ট মাসে গর্ভপাত হয়। এরপরই আরও নির্যাতন শুরু হয়। 

 

গত জুলাই মাসেই পুলিশকে ধর্ষণের বিষয়টি জানিয়েছিলেন তরুণী। শ্বশুর, দেওর ও স্বামীর কেচ্ছা তখনই ফাঁস করেছিলেন তিনি। প্রাথমিক তদন্তে নেমে রবিবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।