আজকাল ওয়েবডেস্ক: “আমি তো পাগল নই, তাহলে মনোবিদের কাছে কেন যাব?” এই বাক্যটি এখনও বহু মানুষের মুখে শোনা যায়। আজও বহু মানুষ মনে করেন মনোবিদ মানেই ‘পাগলের ডাক্তার’ কিংবা মনোবিদের কাছে যাওয়া মানেই তা মানসিক দুর্বলতার লক্ষণ। কিন্তু বাস্তব হল, মনোবিদের সাহায্য নেওয়া কোনও দুর্বলতা নয়, বরং তা আত্মচর্চার এক সাহসী পদক্ষেপ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) হিসাব বলছে, গোটা বিশ্বে প্রতি চারজন মানুষের মধ্যে একজন জীবনের কোনও না কোনও সময় মানসিক সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু এখনও বহু মানুষ চিকিৎসা নিতে দ্বিধায় ভোগেন। এর অন্যতম প্রধান কারণ লোকচক্ষুর সামনে আত্মসম্মান হারানোর ভয়। অথচ বিজ্ঞান স্পষ্ট জানাচ্ছে, হৃদরোগ হলে যেমন কার্ডিওলজিস্টের দরকার হয়, তেমনই দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগ, অবসাদ, ঘুমের সমস্যা, প্যানিক অ্যাটাক ইত্যাদির ক্ষেত্রে একজন প্রশিক্ষিত মনোবিদের সাহায্য নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, থেরাপি মানে শুধুই ‘সমস্যা দূর’ করা নয়। বরং কাউন্সেলিং বা থেরাপি নিজের মন ও আবেগকে ভাল ভাবে বোঝার একটি উপায়। রেগে যাওয়া, ভয় পাওয়া, সম্পর্ক টানাপোড়েন দৈনন্দিন জীবনে ঘটে যাওয়া এই সব ঘটনার নেপথ্যের কারণ চিহ্নিত করে সামনে এগিয়ে চলার রাস্তা তৈরি করে থেরাপি।
আজকের দুনিয়ায় মানসিক চাপ, কাজের চাপ, সামাজিক চাপ চরমে। এই সময় থেরাপি নিজের সঙ্গে একটু কথা বলার, নিজের পাশে দাঁড়ানোর সাহসী উপায়। পশ্চিমী দুনিয়ার বহু সেলেব থেকে সাধারণ মানুষ থেরাপিকে জীবনের অঙ্গ করেছেন। আমরাও পারি, বোঝার ভুল কাটিয়ে, মনের চিকিৎসাকে স্বাভাবিক করে তুলতে। কারণ, কাউন্সেলিং এবং থেরাপি মানসিক দুর্বলতার প্রতীক নয়, বরং মানসিক সমস্যার কথা উপলব্ধি করে তাকে নির্মূল করার সচেতন প্রয়াস।
